প্রতিদিন লাল চালের ভাত খাওয়া কি ঠিক?

লাল চাল স্বাস্থ্যকর হলেও প্রতিদিন নয়, খেতে হবে পরিমিত ও সচেতনভাবে।
বর্তমানে অনেক স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তি সাদা চালের বদলে লাল চালের ভাত বেছে নিচ্ছেন। কারণ, সাদা চালের তুলনায় লাল চালে রয়েছে বেশি পুষ্টিগুণ। যদিও দুটিই ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ, তবে লাল চালে অতিরিক্তভাবে পাওয়া যায় ফোলেট, ভিটামিন বি১, বি২, বি৬, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও সেলেনিয়াম। এতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যৌগ—ফেনল ও ফ্ল্যাভনয়েডস।
উচ্চ আঁশযুক্ত লাল চাল হজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং গ্যাস প্রতিরোধ করে। এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো।
এ ছাড়া এতে থাকা লিগন্যান্স নামক উপকারী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস চর্বি ভাঙতে সহায়তা করে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক, যা অস্টিওপরোসিস ও আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি কমায়।
তবে লাল চাল খাওয়ার কিছু সতর্কতাও আছে। এতে থাকা ফাইটিক অ্যাসিড আয়রন ও দস্তার শোষণ ব্যাহত করতে পারে। বেশি আঁশ থাকায় আইবিএস আক্রান্তদের সমস্যা বাড়তে পারে, আবার কিছু মানুষের পেটে গ্যাসও হতে পারে। কিডনি রোগীদেরও এই চাল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া যারা সার্জারি করাতে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্যও লাল চাল ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি রক্তে শর্করার ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে। তাই সার্জারির কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে লাল চাল খাওয়া বন্ধ রাখা উচিত।
সব মিলিয়ে, লাল চাল স্বাস্থ্যকর হলেও তা প্রতিদিন নয়, নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং কিছু বিরতি দিয়ে খাওয়াই উত্তম।
সংক্ষেপে: লাল চাল পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যবান্ধব, তবে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিদিন খেলে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে। মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়ে খাওয়াই ভালো।