মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য”

মির্জা আব্বাস
অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দিচ্ছেন। উনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন ভালো মানুষের হাতে দিতে হবে। আমরা বুঝি আপনারা কী করছেন। এদেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না।”
বুধবার (২৮ মে) নয়াপল্টনে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ এই অভিযোগ করেন তিনি। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
স্টারলিংক ও করিডর ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, “স্টারলিংক ছাড়া চলেছি, ওয়াইফাই ছাড়াও চলেছি। দেশ ভালোই ছিল। স্টারলিংক আনছেন কার জন্য? আনছেন আরাকান আর্মির জন্য। করিডর কার জন্য? এখান দিয়ে আরাকান আর্মির মাল-মশলার জন্য। সেন্টমার্টিন কার জন্য? বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “কিন্তু একজন তরুণ বেঁচে থাকলেও দেশের ভৌগলিক অখণ্ডতা বিঘ্নিত হতে দেব না। কেউ কেউ বলছেন বাংলাদেশের মানচিত্র পরিবর্তন হবে। আমি জানতে চাই, কী ধরনের পরিবর্তন হবে? ছোট হবে না বড় হবে।”
মির্জা আব্বাস বলেন, “গণমানুষের আকাঙ্ক্ষিত, আস্থার একটি প্রতীক ছিল সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার)। কিন্তু ৯ মাসের কার্যক্রমে আমরা কিছু পাইনি। শুধু পেয়েছি অবজ্ঞা। এ দেশের মানুষকে সরকার অবজ্ঞা করছে। এই সরকারের মধ্যে যারা আছে, আমি বলি এই সরকার ঔপনিবেশিক সরকার। এই সরকারের মধ্যে যারা আছে অর্থাৎ ৯০ ভাগই এদেশের নাগরিক নয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আন্দোলন করলো ছাত্র-জনতা, আর ওনারা ঘাড়ে চেপে বসেছেন। আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। ওনারা বললেন সংস্কার করে নির্বাচন দেবেন। এই ৯ মাসে যা পারেননি, ৯ বছরেও পারবেন না; ৯০ বছরেও পারবেন না!”
“আমি একটা মিটিংয়ে প্রশ্ন করেছিলাম সেন্টমার্টিন, সাজেকে কী হচ্ছে—এটা একটু সরকার আমাদের কাছে স্পষ্ট করুক। আজও সরকার স্পষ্ট করেনি। আজকে করিডর নিয়ে কথা হচ্ছে। করিডরে লাভ কী, লস কী—সেটা দেখার দরকার নেই। আমরা যেমন ছিলাম তেমন থাকতে চাই। এরচেয়ে বেশি কিছু আমাদের দাবি নেই। করিডরের কোনো প্রশ্নই আসে না।”
বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সরকারের মাথা থেকে পচন ধরেছে। নিচ পর্যন্ত পচন ধরেছে। এভাবে চলতে থাকলে আওয়ামী লীগ যা ক্ষতি করেছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করবে এরা।”
নেতাকর্মীদের সতর্ক করে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিভিন্নভাবে চাঁদাবাজি করছে। বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। আপনারা সতর্ক থাকুন। আমরা আগেই বলেছি যারা চাঁদাবাজি করে তাদের কেন পুলিশ ধরে না।”
তারুণ্যের চলমান রাজনৈতিক অংশগ্রহণের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “তরুণদের এই আন্দোলন আমাদের দারুণভাবে আন্দোলিত করেছে। এই বয়সে আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বেগম খালেদা জিয়াকে তিন বারের প্রধানমন্ত্রী করেছিলাম। আপনারাও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আবারও দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন।”