আপনি কীভাবে এত শিক্ষার্থীকে প্রতারিত করলেন?

শিক্ষার্থীদের কোটি টাকা আত্মসাৎ, ১০ দিনের রিমান্ডে খায়রুল
বিদেশে পাঠানোর প্রলোভনে শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারকে মঙ্গলবার ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালত তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কীভাবে আপনার সন্তানতুল্য এত শিক্ষার্থীকে প্রতারিত করলেন?’
খায়রুল বাশার আদালতে বলেন, তিনি "পরিস্থিতির শিকার", যদিও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
এর আগে সোমবার রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। মঙ্গলবার সকাল থেকে আদালত এলাকায় জড়ো হতে থাকেন ভুক্তভোগীরা। খায়রুল বাশারকে আদালতে আনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা স্লোগান দেন এবং তাঁকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়েন।
আদালতে হেলমেট-বুলেটপ্রুফে হাজির
বিকেলে খায়রুল বাশারকে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় আদালত তাঁর ব্যক্তিগত ও মামলার তথ্য জানতে চান। তিনি জানান, তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, দুটি বিয়ে করেছেন এবং তাঁর পাঁচ সন্তান রয়েছে।
শতাধিক শিক্ষার্থীর টাকা আত্মসাৎ
তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপরিদর্শক আদালতে জানান, খায়রুল বাশার ১৪১ শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী সিআইডিকে জানিয়েছেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, “বাশার কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নামে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন। তিনি কোনো টাকা ফেরত দেননি, তাঁর দেওয়া চেকগুলো ব্যাংকে প্রত্যাখাত হয়েছে।”
এ সময় আদালতে আরও অভিযোগ ওঠে, বাশারের লোকজন ভুক্তভোগীদের মারধর করতেন, এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৭০টি মামলা ও একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
আদালতের মন্তব্য: ‘জীবন তো জেলেই কেটে যাবে’
আদালত বলেন, “আপনার নামে যত মামলা, তাতে তো আপনার জীবন জেলেই কেটে যাবে।” আদালত এরপর ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ
আদালতের বাইরে শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবার মানববন্ধন ও স্লোগান দেন। ভুক্তভোগী নাঈম হাওলাদার বলেন, “আমাকে কানাডায় পাঠানোর কথা বলে ১০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। বাবার সুদের টাকায় সেই টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু আজও কোনো ফেরত পাইনি।”