আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে শনিবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েতের ডাক দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শুক্রবার রাতে শাহবাগে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আগামীকাল তিন দফা দাবিতে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আগামীকাল বিকাল ৩টার দিকে শাহবাগে গণজমায়েত পালন করা হবে।
“সারা দেশে যেখানে যেখানে জুলাই আন্দোলন হয়েছে, আমরা সেখানে সেখানে গণজমায়েত ঘোষণা করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের দাবি আদায় না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ব না। আগামীকাল আওয়ামী লীগের নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র পদর্শিত হবে।”
শুক্রবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ ও দলটির সব অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করা; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা এবং জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা।
শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচিতে হাসনাত বলেন, “গতকাল রাত ১০টা থেকে আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা জানি না এ কর্মসূচির শেষ কোথায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
নতুন কর্মসূচি ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা শাহবাগেই ছিলেন।
আন্দোলনে সংহতি জানানো বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক রাইয়ান ফেরদৌস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রাতেও এখানে থাকব। আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হাসনাত নিজের ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেওয়ার পর সেখানে এক দল বিক্ষোভকারী জড়ো হন।
শুক্রবার জুমার পর তারা মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে তাতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
সেই অবস্থান কর্মসূচির অস্থায়ী মঞ্চে শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দেন হাসনাত।
এরপর বিকালে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার কাছে মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন।
এদিকে দাবির বিষয়ে শুক্রবার সরকারের অবস্থান জানিয়ে একটি বিবৃতি দেয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
সেখানে বলা হয়, “সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।
“এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে।”
এ বিষয়ে সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ‘জনদাবির’ প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। চলমান তদন্তে সহযোগিতা করার পরিবর্তে, আওয়ামী লীগ দেশের ‘স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করার জন্য স্পষ্টতই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে’।