শ্রমিক-কৃষকের স্বার্থে ভারতব্যাপী বন্ধ

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বিমা খাতের কর্মীদের ধর্মঘটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
শ্রমিক ও কৃষকদরদি নীতি প্রণয়নের দাবিতে দেশের ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও তাদের সহযোগী সংগঠন আজ সকাল থেকে ২৪‑ঘণ্টার ভারত বন্ধ পালন করছে। সংগঠনগুলোর অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদি সরকারের শ্রম আইন সংস্কার, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর ধারাবাহিক বেসরকারিকরণ এবং গ্রামীণ অর্থনীতি উপেক্ষা—সবই “করপোরেটপন্থী” পদক্ষেপ, যা শ্রমিক‑কৃষকের জীবন‑জীবিকাকে সংকটে ফেলেছে।
কোথায় কী প্রভাব
কেরালা: বামশাসিত রাজ্যটিতে অধিকাংশ দোকানপাট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য।
পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওডিশা: জাতীয় সড়ক ও রেলপথে অবরোধের কারণে ট্রেন ও বাস চলাচল ব্যাহত। ওডিশার খুরদায় জাতীয় সড়কে ধর্না, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা ও নদীয়ায় ট্রেন আটকে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
রেল ও সড়ক পরিবহন: বন্ধ‑সর্মথকদের বিক্ষোভে বিভিন্ন রুটে ট্রেন দেরি এবং কিছু স্থানে বাতিল। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে একাধিক রাজ্যে সরকারি‑বেসরকারি বাসের সংখ্যা কমানো হয়েছে; কোথাও কোথাও বাসচালকরা হেলমেট পরে গাড়ি চালাচ্ছেন।
ব্যাংকিং ও বিমা: অল ইন্ডিয়া ব্যাংক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ইউনিয়নগুলো বন্ধে যোগ দেওয়ায় বহু শাখা খোলা থাকলেও পূর্ণাঙ্গ সেবা দিতে পারছে না। বিমা খাতের কর্মীরাও কর্মবিরতিতে শামিল।
বিদ্যুৎ খাত: প্রায় ২৮ লাখ কর্মী বন্ধে সমর্থন জানানোয় কয়েকটি রাজ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা।
কারা অংশ নিয়েছে
এআইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, সিআইটিইউ, হিন্দ মজদুর সভাসহ কংগ্রেস ও বামপন্থী ঘরানার সর্বভারতীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো যৌথভাবে এই বন্ধ‑এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা জানায়, গত বছর শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়ার কাছে ১৭ দফা দাবি‑স্মারকলিপি জমা দিলেও কোনও অগ্রগতি হয়নি। সরকারের নীতিকে তারা “বড় করপোরেট‑বান্ধব এবং শ্রমিক‑কৃষক‑বিরোধী” বলে আখ্যায়িত করেছে।
কী বাদ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও কিছু অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বন্ধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
সামনে কী
ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা জানিয়েছেন, শ্রমিক‑কৃষকের দাবি পূর্ণ না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সরকারের তরফে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে রাজ্যগুলোকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।