নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি

নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি স্তিনে রেনাতে হোহেইম আজ রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশের প্রতি নরওয়ের অব্যাহত সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্তোরের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন।
সাক্ষাৎকালে হোহেইম বলেন, “আপনি নরওয়েতে অত্যন্ত পরিচিত এবং সম্মানিত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই আপনার প্রশংসা করে থাকেন। নরওয়ের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক বহুদিনের এবং গভীর।”
প্রফেসর ইউনূস নরওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় আপনাদের সহযোগিতা অনস্বীকার্য।”
নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারি বহুপাক্ষিক সহযোগিতা এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি তাদের দেশের প্রতিশ্রুতি পুনরায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়ায় আমরা সমর্থন জানাতে এসেছি। আপনার নেতৃত্বে দেশের জনগণের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।”
প্রফেসর ইউনূস সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে বহু প্রাণহানি ঘটেছে এবং দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের সরকারের সময়ে প্রতিবছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হতো। ব্যাংকের ঋণকে উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হতো, যার ফলে বিশাল বকেয়া বিলের বোঝা আমরা পেয়েছি।”
তিনি জানান, এসব সংকট সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা বাংলাদেশের প্রতি বাড়ছে। “সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিডা সম্মেলনে নরওয়ের কিছু প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিগুলো অংশ নিয়েছে। তারা শুধু দায়বদ্ধতা থেকেই নয়, বরং সম্ভাবনার প্রতি বিশ্বাস নিয়ে এসেছে।”
মানবিক সংকট প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি নরওয়ের সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “তারা স্বপ্ন নিয়ে জন্মেছে। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত নয়, আমরা তাদের পাশে থাকব।”
হোহেইম এই সংকটের ভয়াবহতা স্বীকার করে বলেন, “বাংলাদেশ যেভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করছে, তা গভীরভাবে প্রশংসনীয়। আমরা সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও সম্প্রসারিত এবং গতিশীল করতে আগ্রহী।”
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. মোশারফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।