পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর হঠাৎ ভারত সফরে এসেছেন—পাক-ভারত উত্তেজনার মধ্যে এই সফর কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে।
পাক-ভারত উত্তেজনার মধ্যেই হঠাৎ করেই ভারত সফর করলেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই বুধবার দিবাগত রাতে নয়াদিল্লি পৌঁছান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এক্সে দেওয়া পোস্টে জয়শঙ্কর এ বৈঠকের তথ্য নিশ্চিত করেন।
একই সময়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগছিও ভারত সফর করছেন। তবে তাঁর সফর পূর্বনির্ধারিত। তিনি ভারত-ইরান যৌথ কমিশনের বৈঠকে সহসভাপতিত্ব করেন জয়শঙ্করের সঙ্গে।
জয়শঙ্কর এক্সে লেখেন, “সৌদি প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইরের সঙ্গে ভালো একটি বৈঠক হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারতের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছি।” তবে আলোচনার বিস্তারিত জানা যায়নি।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, “সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার” অর্থ মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। আইএসপিআরের তথ্যমতে, হামলায় নারী-শিশুসহ ৩১ জন নিহত, আহত ৫৭ জন। ভারতের দাবি, পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় তাদের ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, আহত ৪৩ জন। নিহত হন ভারতের এক নিরাপত্তা সদস্যও।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ করে ভারত। সেই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার রাতে পাল্টা হামলা চালানো হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে পাকিস্তানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে সফর করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগছি। ইসলামাবাদে নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর নয়াদিল্লি সফরে আসেন তিনি। দুই দেশকে “ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী” বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, “তেহরান শান্তি প্রতিষ্ঠায় সদিচ্ছা দেখাতে প্রস্তুত।”
এদিকে, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন, ভারত-পাকিস্তান এনএসএদের মধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। যদিও পর্যায় ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত বলেননি।
সম্প্রতি পাকিস্তান সরকার সেনা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আসিম মালিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) হিসেবে নিয়োগ দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে সম্ভাব্য যোগাযোগের পথ তৈরি করতেই এই নিয়োগ।
গত এক দশকে দুই দেশের এনএসএ পর্যায়ে পরোক্ষ বৈঠক থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে হয়েছে। এবারও হয়তো সেই পথেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে।