বাঙালিদের হেনস্তার প্রতিবাদে কলকাতায় মমতার মিছিল

‘বাংলাদেশি’ তকমায় হেনস্তার প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিল।
ভারতের বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে আজ বুধবার কলকাতায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতার কলেজ স্কয়ার থেকে ডরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মমতার নেতৃত্বে বিশাল মিছিল হয়। বেলা দুইটার কিছু পরে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শুরু হওয়া মিছিল শেষ হয় ধর্মতলায় আয়োজিত প্রতিবাদ সভায়। মিছিল ও সভায় অংশ নেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের শীর্ষ নেতা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও হাজারো কর্মী-সমর্থক।
মমতা বলেন, ‘বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই মানুষকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে, তুলে নিয়ে আটককেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাভাষীদের ওপর এ ধরনের অত্যাচার বরদাশত করা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাঙালিদের “পুশব্যাক” করা হচ্ছে কোচবিহার, নদিয়ায়। সীমান্ত পাহারা দেয় বিএসএফ, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। তাই অনুপ্রবেশের দায়ও তাদের। বাঙালির ওপর অত্যাচার আমরা আর মেনে নেব না। ’
আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে বিজেপিকে হুঁশিয়ার করে মমতা বলেন, ‘২৬ সালের ভোটের আগে আবার খেলা হবে। ভোটের সময় মতুয়াদের চায় বিজেপি, ভোটের পর করে অত্যাচার।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আজ বাম-রাম জোট বেঁধেছে। জগাই-মাধাই-গদাই এক হয়েছে। এদের রুখতেই হবে।’
তবে মমতার বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি অভিযোগ করেন, ‘মমতা এখন বাঙালি বাঙালি করে রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের বৈধতা দিতে চাইছেন। ভোটে জিততে রোহিঙ্গা ও মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিতে মরিয়া।’
শুভেন্দু পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘যদি এতই বাঙালিপ্রেমী হন, তাহলে লোকসভা নির্বাচনে কীর্তি আজাদ ও ইউসুফ পাঠানকে কেন প্রার্থী করলেন? তখন কি কোনো বাঙালি প্রার্থী খুঁজে পাননি?’
এদিকে সিপিএম, সিপিআই (এমএল) ও জাতীয় কংগ্রেসও বাংলাভাষীদের হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাভাষীদের হেনস্তার বিষয়টি সামনে এনে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে জনসমর্থন গড়তে চাইছে তৃণমূল। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ, এটি ভোটের আগে তৃণমূলের ‘বাঙালি আবেগের কার্ড’ খেলা।
১৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুর্গাপুরে জনসভায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এর তিন দিন পর, ২১ জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে মমতার বড় সমাবেশ হবে ধর্মতলায়। তার আগে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী।