বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক

এমভি সেজুঁতি নামে বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে
বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দর চ্যানেলে নোঙর করে রাখা বাণিজ্যিক জাহাজ এম ভি সেঁজুতি–তে সংঘটিত ডাকাতির রহস্য উদঘাটন করেছে কোস্টগার্ড। তদন্তে উঠে এসেছে, ডাকাতির পুরো পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন হয় জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুল হকের নেতৃত্বে। মূল কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে নাবিকদের দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়া থেকে তৈরি হওয়া ক্ষোভ।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশনস কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান জানান, ডাকাতির ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং এতে চিফ ইঞ্জিনিয়ার সরাসরি জড়িত। তাঁর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের নিয়ে জাহাজ থেকে মূল্যবান যন্ত্রাংশ লুট করে তা বিক্রি করে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করা হয়।
উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে—ইঞ্জিনের বিভিন্ন স্পেয়ার পার্টস, বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারির চার্জারসহ জাহাজের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। এগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডাকাতির ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন—জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুল হক, পেশাদার ডাকাত সুমন হাওলাদার (২১) এবং ডাকাতির মালামাল ক্রেতা মো. সুমন হোসেন (৩০)। তাদের মোংলা থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, জাহাজটির নাবিকেরা ছয়-সাত মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন না পাওয়ায় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভে ফুঁসছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে এর আগেও একাধিকবার স্থানীয় গোষ্ঠীর মাধ্যমে জাহাজ থেকে যন্ত্রাংশ বিক্রি করা হয়েছে। এবার ঘটনাটিকে “ডাকাতি” রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
এর আগে গত সোমবার এক লিখিত বিবৃতিতে চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুল হক দাবি করেন, রবিবার দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে একদল অস্ত্রধারী ডাকাত জাহাজে উঠে সবাইকে জিম্মি করে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে কোস্টগার্ডের তদন্তে এই বিবৃতির সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যায়নি।
উদ্ধার হওয়া মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানায় কোস্টগার্ড।