পুরান ঢাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের ছয় দফা দাবি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর চকবাজারে প্রকাশ্যে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সাত দিনের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর আহমেদ বলেন, “পুরান ঢাকায় আমরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে ব্যবসা করছি। সোহাগকে যেভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে, তাতে আমরা সবাই শঙ্কিত। পুলিশের ওপর আমাদের আস্থা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে। আর সাত দিনের মধ্যে সোহাগ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা রাজপথে নামব।”
মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী সৈয়দ মো. বশির উদ্দীন বলেন, “পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা জাতীয় রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অথচ আমাদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পাচ্ছি না। তাই আমাদের নিজেদের আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে, প্রতিটি দোকানে লাঠি রাখার অনুমতি দেওয়া হোক। না হলে আজ সোহাগ, কাল হয়তো আমাদেরই কেউ প্রাণ হারাবে।”
তিনি আরও বলেন, “চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—
- হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সাত দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার;
- সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত;
- ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ;
- অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে এলাকায় সেনা টহল বৃদ্ধি;
- পুরান ঢাকার ব্যবসায়িক অঞ্চলগুলো থেকে কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদক নির্মূল;
দাবিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে ব্যবসায়ী সমাজ কঠোর কর্মসূচির ডাক দেবে।
বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা একটি শৃঙ্খল ও নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশের আশায় ছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে— চাঁদাবাজি, মাদক ও সহিংসতা আরও বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং ব্যবসার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।