নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা প্রস্তুতি শুরু, দেড় লাখ পুলিশ পাবে প্রশিক্ষণ

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ ও প্রশাসনিক সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে। সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে নভেম্বর পর্যন্ত দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনকেন্দ্রিক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
আইজিপির উদ্ধৃতি দিয়ে শফিকুল আলম জানান, নির্বাচনকালে পুলিশ সদস্যরা মূলত ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে কাজ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আরও জানান, গত ৫ আগস্ট থেকে সেনাসদস্যরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং তাদের বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে। নির্বাচনের সময় মাঠে থাকবেন ৬০ হাজার সেনাসদস্য।
গুজব ও ভুয়া তথ্য ঠেকাতে ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠনের পরিকল্পনার কথা জানান প্রেস সচিব। এটি গুজব দ্রুত শনাক্ত করে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইতিবাচক কার্যক্রম প্রচারেও এটি সহায়ক হবে।
বৈঠকে গঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমান্ড কাঠামোর অধীনে একটি মিডিয়া উইং প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও আলোচনা হয়, যা নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং ও তথ্য প্রকাশে সহায়তা করবে।
গোপালগঞ্জসহ কিছু এলাকায় সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস ব্যর্থতার বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ইতিমধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে আগেভাগে তথ্য সংগ্রহের জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনপূর্ব প্রশাসনিক রদবদলের প্রসঙ্গে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, "সার্বিকভাবে নয়, যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই রদবদল হবে।" তিনি জানান, সহিংসতা-প্রবণ ‘হটস্পট’ এলাকা চিহ্নিত করে প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিনের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম, রাজনৈতিক সংলাপ ও শুল্ক নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রেস সচিব জানান, রাতেই বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করবে, যেখানে তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুল্ক বিষয়ে আলোচনা করবে।
তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয়ের মাধ্যমে সরকার একটি নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।”