উমামা ফাতেমা: ‘জুলাইকে মানি মেকিং মেশিনে রূপ দেওয়া হয়েছে’

ফেসবুক লাইভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ও নানা অভিযোগ তুলে ধরেন উমামা ফাতেমা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেছেন, জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনের একটি ‘ট্র্যাজিক ঘটনা’ ছিল। গতকাল রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই ঘণ্টার বেশি সময়ের লাইভে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
উমামা বলেন, "জুলাই আমার জীবনের অনেক বড় অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু মুখপাত্র হওয়ার পর আবিষ্কার করি, এই আন্দোলনকে মানি মেকিং মেশিনে পরিণত করা হয়েছে। টেন্ডার বাণিজ্য, তদবির, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ—এসব চলত রেগুলার বেসিসে। মুখপাত্র হওয়ার আগে আমার এসবের কোনো ধারণাই ছিল না।"
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় ব্যবহার করে আন্দোলনের পরপরই বিভিন্ন জায়গায় দখল ও চাঁদাবাজি শুরু হয়। “তখন মনে হয়েছিল, রক্ষীবাহিনীর মতো সমন্বয়ক বাহিনী তৈরি হচ্ছে,” বলেন উমামা।
উমামা ফাতেমা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোডের উপদেষ্টাদের বাসায় বসেই নেওয়া হতো, যার সঙ্গে মাঠের কর্মীদের কোনো সম্পৃক্ততা থাকত না। তিনি বলেন, "আমি নিজেকে পুরো প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করতাম।"
তিনি আরও দাবি করেন, সংগঠনের ভেতরে স্বজনপ্রীতি, অভিযোগ গোপন করা এবং নেতৃত্বের পক্ষপাতিত্ব ব্যাপকভাবে ছিল। "শুধু চট্টগ্রাম অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা খতিয়ে দেখলেই অনেকের মুখোশ খুলে যেত," বলেন তিনি।
জানান, ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি এবং জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে সংগঠন রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে চলে যায়। এতে তিনি আপত্তি জানান এবং ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
উমামা বলেন, “এই প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকা সম্ভব নয়, যদি কারও ন্যূনতম আত্মসম্মান থাকে। আমাকে কেউ টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করেছে—আমি সেটা নই।”
লাইভের শেষাংশে তিনি বলেন, “আমার ভালো সিজিপিএ, ভালো সাবজেক্ট, ভালো পরিবার—এই সবই আছে। আমি জীবনটাকে কখনো অর্থ উপার্জনের যন্ত্র ভাবিনি। বরং দেশের জন্য কিছু করার স্বপ্ন ছিল বলেই যুক্ত হয়েছিলাম।”