তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি: মঈদুল হাসান

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন লেখক মঈদুল হাসান।
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে দেশের স্বাধীনতার 'প্রধান পুরুষ' আখ্যায়িত করেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক মঈদুল হাসান। তিনি বলেন, "তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে আমাদের জানার পরিধি অত্যন্ত সীমিত। ইতিহাসের বিকৃত উপস্থাপন ভেঙে বস্তুনিষ্ঠভাবে সত্য তুলে ধরতে হবে।"
সোমবার জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দেশের ৩৬টি গ্রন্থাগারের শিক্ষার্থীরা। প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল—‘মুক্তিযুদ্ধের আড়ালের নায়ক: তাজউদ্দীন আহমদ’। ‘ক’ ও ‘খ’ দুই বিভাগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় মোট ৩১ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা লেখক শারমিন আহমদ, লেখক ও অধিকারকর্মী ফিরোজ আহমদ এবং বিচারকমণ্ডলীর সদস্য সোহান রিজওয়ান। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইনামুল হক।
অনুষ্ঠানে তাজউদ্দীন আহমদের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি গীতি-আলেখ্য পরিবেশন করে মিরপুরের আলোকবর্তিকা গ্রন্থালয়। এরপর স্মৃতিচারণামূলক বক্তব্যে মঈদুল হাসান জানান, ১৯৭৪ সালে লন্ডনে থাকাকালে তাজউদ্দীন আহমদ তাঁকে নিউইয়র্কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, "প্রধানমন্ত্রী এমন একটি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন, যা জনগণ গ্রহণ করবে না। আমি এমন কোনো প্রক্রিয়ায় থাকতে চাই না। পদত্যাগই হবে আমার প্রথম কাজ।"
তিনি আরও দাবি করেন, তাজউদ্দীন আহমদকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল এবং সেই সময় শেখ ফজলুল হক মণির জড়িত থাকার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। এমনকি তাঁকে বিদেশে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল, যা সফল হয়নি।
তাজউদ্দীনের কন্যা শারমিন আহমদ বলেন, তাঁর পিতা ছিলেন একজন সৎ, সাশ্রয়ী ও আত্মমর্যাদাবান মানুষ। তিনি বলেন, "বাবা সবসময় বলতেন, জনগণের নেতা হতে হলে সবকিছু ত্যাগ করতে হয়। ভারতের সহযোগিতা ছিল সত্য, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ আমাদের নিজস্ব যুদ্ধ। সম্পর্ক হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে।"
সভাপতির বক্তব্যে আফসানা বেগম বলেন, “এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলবে বলে আমরা আশাবাদী।”