সাগরে ভেসে সেন্ট মার্টিনে আশ্রয় নিলেন ২০ রোহিঙ্গা

সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় ট্রলারসহ সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকেরা
সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় মিয়ানমার থেকে আসা একটি ট্রলারে থাকা ২০ জন রোহিঙ্গা নাগরিক সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ট্রলারটি দ্বীপের উত্তর তীরে এসে ভেড়ে।
ট্রলারে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ১ জন শিশু রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।”
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারটি দুপুরের দিকে দ্বীপের উত্তর সৈকতে পৌঁছায়। সাগর উত্তাল হয়ে উঠলে তাঁরা জীবন বাঁচাতে দ্বীপে আশ্রয় নেন।
তিনি আরও জানান, ওই ট্রলারে থাকা রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন—মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত থেকে বাঁচতে তাঁরা পালিয়ে এসেছেন। বেশ কয়েকজন আগে কারাগারে বন্দী ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। তবে সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি সেন্ট মার্টিন উপকূলে চলে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ট্রলারটি দেখতে পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেন। পরে বিজিবির একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে একটি হোটেলে আশ্রয় দেয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাঁদের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা বিজিবির হেফাজতে আছেন।
সীমান্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাত শুরু হয়। টানা কয়েক মাসের লড়াইয়ের পর ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর মংডুসহ রাখাইনের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এতে করে গত ১৮ মাসে নতুন করে দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
এই বিষয়ে সেন্ট মার্টিনে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের স্টেশনগুলোর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের কেউ ফোন ধরেননি।