দ্রুজ-সেনাবাহিনী সংঘাত থেমেছে, সিরিয়াকে বিভক্ত করার অভিযোগ - ইসরায়েলের বিরুদ্ধে

সংঘাত থামার পর সুয়েইদার রাস্তায় শান্তির নীরবতা।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে সেনাবাহিনী ও সংখ্যালঘু দ্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে চার দিন ধরে চলা সংঘাত শেষ হয়েছে। সংঘাতের মাঝেই সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল সিরিয়াকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলার পর এক ভাষণে এ অভিযোগ করেন তিনি।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা দ্রুজ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার জন্যই সুয়েইদা প্রদেশ থেকে সিরীয় বাহিনীর সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার রাতে সেনাবাহিনী প্রদেশটি ছেড়ে গেলে বৃহস্পতিবার উচ্ছ্বসিতভাবে সড়কে নামে দ্রুজ যোদ্ধারা।
আহমেদ আল-শারা বলেন, “ইসরায়েল আমাদের জাতীয় ঐক্য নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। তারা সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ধ্বংস করতে চায়।” তিনি জানান, দ্রুজদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন সরকারের অগ্রাধিকার।
সোমবার শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। নিহতদের মধ্যে সেনা, দ্রুজ যোদ্ধা, নারী, শিশু ও চিকিৎসাকর্মীরাও রয়েছেন। সংঘাত থামাতে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পক্ষগুলোর মধ্যে যোগাযোগ হয়।
এদিকে, বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় দামেস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছেও বোমা বর্ষণ করা হয়। এতে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত পাঁচ সদস্য নিহত হন।
ইসরায়েলি বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ইয়াল জামির বলেন, “আমরা দক্ষিণ সিরিয়াকে সন্ত্রাসের ঘাঁটি হতে দেব না।” ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দ্রুজ জনগণের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর পদক্ষেপ তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
রয়টার্সের স্থানীয় সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, সংঘাতের সময় সরকারি সেনারা সুয়েইদার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়েছে, লুটপাটও করেছে। এমনকি সেনা প্রত্যাহারের সময়ও সহিংসতা হয়েছে। ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে দ্রুজরা গোঁফ রাখে—সেটিও কেটে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আহমেদ আল-শারা একসময় আল-কায়েদার একটি শাখার নেতা ছিলেন। ২০১৬ সালে সম্পর্ক ছিন্ন করে গত বছর বাশার আল–আসাদ সরকার পতনের পর তিনি অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হন। এখন সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গেও নিরাপত্তা বিষয়ক যোগাযোগ বাড়ছে।