কারা, কেন বাদ দিল তিন আসামিকে ? - প্রশ্ন যুবদল সভাপতির

‘আসল আসামিরা বাদ, নতুন নাম ঢুকল কেন?’—যুবদল সভাপতির প্রশ্ন
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) হত্যার ঘটনায় মামলার মূল আসামিদের বাদ দিয়ে নতুন তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না।
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, “আমরা জানতে চাই—কারা, কেন পরিবারের দেওয়া তিন আসামিকে বাদ দিয়ে অন্য তিনজনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করল? ঘটনার দুই দিন পর এটি প্রচার পেল—তা–ও রহস্যজনক। এই পুরো বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তিনি বলেন, নিহত লাল চাঁদের বড় বোনের মেয়ের বরাত অনুযায়ী, পরিবারের পক্ষ থেকে যাদের আসামি হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে। “সিসিটিভি ফুটেজে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মামলায় প্রধান আসামি করা হয়নি। প্রকৃত ঘাতকরা এখনো ধরা পড়েনি, যা বোধগম্য নয়,” বলেন তিনি।
৬০ ঘণ্টা পার, গ্রেপ্তার নেই
যুবদল সভাপতি বলেন, “হত্যার ৬০ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে, অথচ যাদের ভিডিওতে দেখা গেছে, তাদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। এত বড় হত্যাকাণ্ডের পরও মূল আসামিদের ধরতে না পারা রহস্যজনক।”
তিনি জানান, সংগঠনের পক্ষ থেকে দায় এড়িয়ে যাওয়া হয়নি। বরং ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে পাঁচজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। “গত এক বছরে হাজারো নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছি। কিন্তু প্রশাসন কি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে? না নিয়ে থাকলে কেন নেয়নি?”—জানতে চান মোনায়েম মুন্না।
খুলনা ও চাঁদপুরের ঘটনারও উল্লেখ
সংবাদ সম্মেলনে খুলনায় যুবদলের বহিষ্কৃত এক নেতাকে গুলি করে হত্যা এবং চাঁদপুরে এক ইমামের ওপর হামলার ঘটনারও উল্লেখ করেন যুবদল সভাপতি। তিনি বলেন, “রগ কেটে হত্যা করা একটি বিশেষ রাজনৈতিক সংগঠনের দীর্ঘদিনের সহিংস চর্চার অংশ। গতকালের দুটি ঘটনাতেও তারাই জড়িত ছিল।”
তিনি দাবি করেন, এসব ঘটনায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। “একটি বিশেষ গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেবল বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে,”—বলেন তিনি।
‘আমরা তো সরকারে নেই’
বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো মিল আছে কি না—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মোনায়েম মুন্না বলেন, “বিশ্বজিৎ হত্যার সঙ্গে এই ঘটনার সাদৃশ্য আছে বলে মনে করি না। আমরা ভিডিওতে যাদের দেখছি, তাদের পরিচয় নিশ্চিত হচ্ছে না—এটা প্রশাসনের বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সরকারে নেই, মন্ত্রণালয়ে নেই—তাহলে আমাদের দায় কীভাবে আসে? সংগঠন হিসেবে আমরা সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। পুলিশের কাছে আমরা আহ্বান জানাই—তারা যেন দোষীদের আইনের আওতায় আনে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।