ভোটারদের জন্য ভিডিও গাইড, ইন্টারনেট বন্ধ নয়—নির্বাচন নিয়ে নতুন নির্দেশনা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের যেকোনো সময় হতে পারে, সে অনুযায়ী এখন থেকেই সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান। এর আগে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নির্বাচন বিষয়ক বৈঠকে অংশ নেন।
প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন—নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত লোকবল আছে কি না তা দ্রুত যাচাই করতে হবে এবং প্রয়োজনে নিয়োগ প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করতে হবে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য প্রতিদিন প্রশিক্ষণ চালানোর কথাও তিনি বলেন।
তিনি আরও বলেন, “আগের নির্বাচনগুলো ছিল লোক দেখানো। এবার প্রকৃত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে—কার কী ভূমিকা থাকবে, সেটি স্পষ্ট করতে হবে। প্রয়োজনে রিহার্সাল নির্বাচনও করতে হবে।”
ভোটারদের জন্য নিয়মাবলি সম্বলিত ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি, যাতে ভোটাররা ভোটদানে সচেতন হন। ভোটারদের সহায়তায় জরুরি নম্বরসহ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের ব্যবস্থাও করতে বলেছেন।
নারী ভোটারদের নিরাপদ অংশগ্রহণে আলাদাভাবে জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, “অর্ধেক ভোটার নারী—তাদের যেন কেউ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে না পারে। নারী কর্মকর্তা ও কর্মীদের যথাযথভাবে মোতায়েন করতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা নতুন ভোটারদের বিষয়ে বলেন, “১৬ বছর মানুষ ভোট দেখেনি। তাদের ভোটকেন্দ্রে সুন্দর অভিজ্ঞতা দিতে হবে, যেন এটাই তাদের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হয়।”
আগের মতো ভোটের দিনে ইন্টারনেট বন্ধ না করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি চান, মিডিয়ায় যেন শুধুমাত্র পেশাদার সাংবাদিকরাই দায়িত্ব পালন করেন, দলীয় কর্মী নয়। এজন্য আগে থেকেই মিডিয়া আচরণবিধি প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পোলিং ও প্রিজাইডিং অফিসারদের সম্ভাব্যভাবে বাদ দেওয়ার কথা বলেছেন ড. ইউনূস। যদিও এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও, যতটা সম্ভব বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনের সময় বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে, যাতে যেকোনো অনিয়ম দ্রুত চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করা যায়।
এছাড়া একটি থানার পুলিশ যাতে নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালন না করে, সেজন্য পুলিশ মোতায়েন পদ্ধতি পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব দেন তিনি।
সভায় এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও, প্রধান উপদেষ্টার এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।