ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলগুলোর এক ছাতার নিচে আসার ডাক

সংখ্যানুপাতিক (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন – পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম, যিনি চরমোনাই পীর হিসেবে পরিচিত। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, দেশে ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার একটি উদ্যোগ চলছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কর্মী গোলাম মোস্তফার কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, “সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। নির্বাচন, স্বৈরাচারবিরোধী বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার একসাথে না হলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, “ইসলামী দলগুলোর মধ্যে পিআর পদ্ধতির বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। আমরা এখন সব ইসলামী দলকে এক করার চেষ্টা করছি, যেন তারা একসাথে একই প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। আমাদের লক্ষ্য, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী সব দল ও জনগণকে নিয়ে একটি কার্যকর রাজনৈতিক মঞ্চ গঠন করা।”
দেশ পরিচালনায় দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ব্যর্থতা উল্লেখ করে ফয়জুল করিম বলেন, “৫৩ বছর ধরে যারা দেশ চালিয়েছে তারা মানুষের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও জুলুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে পারেনি। এখন শুধু ব্যক্তি বা দল পরিবর্তনে চলবে না, নীতি ও আদর্শ বদলাতে হবে। ইসলামই একমাত্র শান্তি ও মুক্তির পথ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই জাতীয় সংসদে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হোক। পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করলে সেটা সম্ভব। আমরা বলছি না সব সংস্কার একদিনেই শেষ করতে হবে, তবে যেগুলো জরুরি, সেগুলোর ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হোক।”
পরে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ইসলামী আন্দোলনের কর্মী গোলাম মোস্তফার (৪৫) কবর জিয়ারত করেন এবং তার পরিবারকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। একইসঙ্গে নিহত পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নুরুন্নবি, নাটোর জেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলী এবং গুরুদাসপুর উপজেলা সভাপতি ওমর ফারুক।