দিনাজপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যা মামলা, তদন্তে মরদেহ উত্তোলন

দিনাজপুরের হাকিমপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে করা একটি হত্যা মামলার তদন্তে মৃত্যুর ১৪ মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হলো হাবিবুর রহমান (৬১) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার ২ নম্বর বোয়ালদাড় ইউনিয়নের নারায়ণপুর কাঁকড়াপালী গ্রামে পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।
নিহত হাবিবুর রহমান ওই গ্রামের মৃত জাফর উদ্দিনের ছেলে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত বছরের ২৩ মে তার মেয়ে ববিতা খাতুন দিনাজপুর আদালতে মনোয়ার হোসেনসহ চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে, গত ২৩ এপ্রিল ২০২৪ হাবিবুর রহমান তার ভাগনে মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধে জড়ান। সেদিন বেলা একটার দিকে স্থানীয় এক ভূমি জরিপকারী দিয়ে তিনি জমির মাপজোখ করে সীমানায় খুঁটি দেন। এ সময় মনোয়ার বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মীমাংসা করে দিলেও পরবর্তীতে হাবিবুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বাড়ির সামনের একটি দোকানে নাশতা করার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন।
হঠাৎ মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হলেও নিহতের পরিবার বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে। পরে মেয়ে ববিতা খাতুন আদালতে মামলা করলে দিনাজপুর আদালত ১২ জুন ২০২৪ মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব সিআইডি দিনাজপুর-কে প্রদান করে।
তদন্ত চলাকালে, সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মরদেহ উত্তোলনের আবেদন করেন। আদালত এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ এপ্রিল ২০২৫ কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
বুধবার দুপুরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন-এর উপস্থিতিতে সিআইডি এবং স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় কবর থেকে হাবিবুর রহমানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে মরদেহটি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেটি আদালতে জমা দেওয়া হবে এবং তদন্ত আরও এগিয়ে নেওয়া হবে।”