গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক দিনে ৭০ জন নিহত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আবারও রক্তাক্ত হয়েছে ফিলিস্তিন। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে অন্তত ৭০টি মৃতদেহ এবং ৩৩২ জন আহত ব্যক্তি পৌঁছেছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, যার ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী শুধুমাত্র ঘরবাড়ি নয়, বরং আশ্রয়কেন্দ্র, তাঁবু এবং খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রেও নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে অসহায় এবং খাদ্যবঞ্চিত সাধারণ মানুষ আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে এসব হামলাকে "মানবতাবিরোধী অপরাধ" হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ৬,৭৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩,৯১৬ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
তবে এই হিসাব ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের তুলনায় ক্ষুদ্র। সামগ্রিকভাবে, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৫৭,৩৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,৩৫,৯৫৭ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন, যাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা অনিশ্চিত। অনেক এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রমও সম্ভব নয়—বোমা হামলা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজায় বর্তমানে প্রতি তিনজনের একজন না খেয়ে দিন পার করছেন। বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ এবং নিরাপদ আশ্রয়ের তীব্র সংকটে আছে গাজার প্রায় ২০ লাখের বেশি মানুষ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে চালানো এই বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ বাড়লেও সামরিক অভিযান থামার কোনো ইঙ্গিত এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।