জি এম কাদেরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান, কাউন্সিলে অংশ নেওয়ার ঘোষণা জাপার তিন জ্যেষ্ঠ নেতার

রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাপার তিন জ্যেষ্ঠ নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মো. মুজিবুল হক চুন্নু।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের দেওয়া অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন দলের তিন জ্যেষ্ঠ নেতা—আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তাঁরা বলেছেন, দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে জি এম কাদের বেআইনিভাবে তাঁদের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তাঁরা এখনো নিজেদের পদে বহাল বলে দাবি করেছেন এবং আসন্ন কাউন্সিলে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপার নেতারা—কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মোস্তফা আল মাহমুদ, নাজমা আকতারসহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহাসচিব ছাড়া কেউ কেন্দ্রীয় সভা আহ্বান করতে পারেন না। তাই যে সভায় আমাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তা অবৈধ। আমরা আমাদের পদেই বহাল আছি।”
তিনি আরও বলেন, “দলের গঠনতন্ত্রে এমন কিছু ধারা রাখা হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ইচ্ছামতো কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন—এটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক। এসব ধারা বাতিল করতে হবে।”
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “আমি দলের মহাসচিব, অথচ আমাকে না জানিয়ে ২৮ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এটা কী ধরনের দলীয় শৃঙ্খলা? শুধু এরশাদের ভাই হওয়াটাই কি নেতৃত্বের একমাত্র যোগ্যতা?”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা জাতীয় পার্টি ছাড়ব না, ভাঙতেও দেব না। কাউন্সিলে আমাদের কথা যদি না শোনা হয়, তাহলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “আমি ১৭ বছর ধরে দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন একটি চক্রান্তের মাধ্যমে আমাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। জি এম কাদের যা করছেন, তা কোনো সুস্থ রাজনীতিক করতে পারেন না।”
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার জি এম কাদের এই তিন নেতাসহ আরও কয়েকজনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেন এবং শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে নতুন মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা দেন। গত এক সপ্তাহে জাপা থেকে ১১ জন নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা দলটির অভ্যন্তরীণ সংকটকে আরও উন্মোচিত করেছে।
জাপা সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের আগামীকাল বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।