দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতেই সংস্কার প্রয়োজন : ড. বদিউল আলম

দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার স্বার্থেই নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "সংস্কার বা পরিবর্তন করা মানেই নতুন করে সাজানো, গোছানো। দেশের মালিকানা জনগণের নিকট ফেরত দিতেই সংস্কার করতে হবে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে রাষ্ট্র আকারে আমরা গড়ে তুলতে পারিনি, যার ফলে এই রাষ্ট্র নাগরিকের কোনও অধিকার দেওয়ার পরিবর্তে অধিকার হরণে ব্যস্ত ছিল।"
তিনি আজ সোমবার আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত চলমান গণইফতারের ২৩তম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ড. বদিউল আলম বলেন, "ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। তাই আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। আমরা এমন সংস্কার করতে চাই যাতে কেউ ক্ষমতায় এসে তার খেয়াল খুশি মতো জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে।"
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণইফতার কার্যক্রমে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত আলোকচিত্র শিল্পী ড. শহীদুল আলম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান মোহাম্মদ শামসুদ্দিন শামস।
অনুষ্ঠানে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আবদুল হক সানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব শফিউল বাশার এবং কেন্দ্রীয় সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুর রব জামিল।
প্রধান অতিথি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, "আপনারা কি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে ভোট দিতে পেরেছেন?" উত্তরে উপস্থিত জনতা একসঙ্গে ‘না’ সূচক ধ্বনি দেন। তিনি বলেন, "আমরা দেশটাকে আর ভোটারবিহীন সংস্কৃতিতে রাখতে চাই না। সংস্কারের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।"
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শহীদুল আলম বলেন, "এই গণইফতারে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই ধরনের প্রোগ্রাম আমাকে অভিভূত ও আবেগতাড়িত অধিকাংশ দল ও মানুষ রাজনীতিই করেন ক্ষমতা প্রদর্শন ও অর্থ উপার্জন করার জন্য। একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শ যে এভাবে প্রকাশ করা যায় তা এবি পার্টিকে না দেখলে বোঝা যেত না।“
তিনি আরও বলেন, "দাবি আদায়ের জন্য জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা উচিত নয়। জনগণের সমঅধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের সংগ্রামের লক্ষ্য। সমতার চেতনা থেকেই আমি গাড়ির পরিবর্তে সাইকেল ব্যবহার করি।"
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান মোহাম্মদ শামসুদ্দিন শামস বলেন, "গণইফতার কার্যক্রম এবি পার্টির একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা সবাই একত্রে কাজ করতে পারলে দেশ অনেক সুন্দর হবে।"
সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, "সবার আগে গণহত্যার বিচার করতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে লুট হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের সন্তান হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু একটি চক্র বিচার নস্যাৎ করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।"
গণইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমদ, যুবপার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, এবি পেশাজীবী কাউন্সিলের সদস্য সচিব মাহবুব শামীম, সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, শরন চৌধুরী, সহ অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহ প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদসহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।