নির্বাচনকে বাধাগ্রস্তকারীরা রাজনৈতিক দল নয়: বিএনপি নেতা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “শেখ হাসিনা অন্তত ডামি-টামি করে মানুষকে কিছুটা বোঝানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তো সরাসরিই বলছে—ইলেকশন দরকার নেই। মানে, নির্বাচন প্রক্রিয়াও চলবে না। তাহলে তারা কি আদৌ কোনো রাজনৈতিক দল?”
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলজিইডি ভবনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আয়োজনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, “যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করে, গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চায় এবং দেশে অস্থিরতা তৈরি করে, তারা রাজনৈতিক দল নয়, বরং একেকটা প্রেসার গ্রুপ। রাজনৈতিক দল হলে নির্বাচনে যেতে চাইবে, প্রতিযোগিতা করবে। কিন্তু তারা বলছে—ইলেকশনই হবে না।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “তাহলে আমাদের কী করতে হবে? সহনশীলতার মাধ্যমে, পরস্পরের প্রতি সম্মান রেখে বিএনপির রাজনীতিকে উচ্চ পর্যায়ে নিতে হবে। এটাই হবে আমাদের রাজনীতি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং পরিচালনা করেন সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, প্রেস ক্লাব সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. আবদুস সাত্তার প্রমুখ।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের কথা তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, “তারেক রহমান কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান না, বরং বিএনপির বক্তব্য সুশৃঙ্খলভাবে তুলে ধরেন। যারা অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন, সহনশীলতা ও সম্মানবোধ হারিয়ে ফেলেছেন—তাদের বিপরীতে বিএনপি সহনশীল, সম্মানজনক ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতির ধারা গড়ে তুলছে।”
তিনি বলেন, “কোনো কমিশন জনগণের মনের ভাষা বুঝবে না। সেই দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। শহরের কয়েকজন ব্যক্তি টেবিলে বসে দেশের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারবে না। পরিবর্তন আসবে নির্বাচনের মাধ্যমে, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার গঠন করে।”
আমীর খসরু আরও বলেন, “শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর দেশের মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন এসেছে। এটা কেউ অনুধাবন করতে না পারলে রাজনীতি করা কঠিন হয়ে পড়বে। অনেকেই জিয়াউর রহমানের ছবি পদদলিত করেছে—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এমন কাজ বন্ধ করে সহনশীল রাজনীতিতে ফিরতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা শেখ হাসিনাকে সরাতে যে ত্যাগ স্বীকার করেছি, তার মূল কারণ স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার রক্ষা করা। কেউ আমার বিরুদ্ধে কথা বলুক, তার সেই অধিকার রয়েছে। এই চেতনা নিয়েই বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি গড়ে উঠবে।”
বিএনপির এ নেতা বলেন, “দেশের মানুষ যাদের জন্য রাস্তায় রক্ত দিয়েছে, মামলা-হামলা-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেই গণতন্ত্র ফেরাতে হবে। এমন একটি দেশ গড়তে হবে যেখানে আমার ভোটাধিকার থাকবে, আমার নির্বাচিত প্রতিনিধি আমার কাছে জবাবদিহি করবে।”