ইসরায়েল-ভারত বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি ঘিরে সমালোচনার ঝড়

গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারত-ইসরায়েলের বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
ইসরায়েল ও ভারতের মধ্যে সম্ভাব্য বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি (Investment Protection Agreement - IPA) ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্ক ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকারকর্মীরা এই চুক্তিকে দুই দেশের ফ্যাসিবাদী নীতিকে বৈধতা দেওয়ার কৌশল এবং পারস্পরিক দায়মুক্তির চেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল সরকার জানায়, তারা ভারতের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত করার পথে। চুক্তির উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়—উভয় দেশে নিরাপত্তা উদ্বেগ থাকায় বিনিয়োগের ঝুঁকি কমানো।
তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধকে কাঠামোগত আড়াল দেওয়া হচ্ছে এবং ভারতের শাসক দল বিজেপির পক্ষ থেকে জায়নবাদকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফিলিস্তিনি লেখক আবদুল্লা মোয়াসওয়েস বলেন, ভারতের সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে বাড়তে থাকা সম্পর্ককে তাদের কূটনৈতিক অর্জন হিসেবে উপস্থাপন করছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে জাতিসংঘে ভোট না দেওয়াও এই নীতির অংশ।
ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব পিপলস মুভমেন্টসের (NAPM) জাতীয় সমন্বয়ক মীরা সংঘমিত্র বলেন, “গণহত্যাকারী দেশের সঙ্গে এই চুক্তি অনৈতিক। ভারত সরকারের উচিত নেতানিয়াহু সরকারের যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা, বিনিয়োগ সুরক্ষা নয়।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশল। বর্তমানে দুই দেশের বার্ষিক অর্থনৈতিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। ভারত ইসরায়েলের ষষ্ঠ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক।
তেলআবিবে নির্মাণশিল্পে হাজার হাজার ভারতীয় শ্রমিক পাঠানোর পরিকল্পনা এবং গোপনে কমব্যাট ড্রোনসহ অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগ ঘিরে ভারতের অভ্যন্তরেও সমালোচনা চলছে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো এই পদক্ষেপ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের অর্থনীতি বর্তমানে চাপের মুখে রয়েছে। সামরিক খরচ বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে। ফলে, হাইফা বন্দরসহ ভারতের বিনিয়োগ কৌশলকে ইসরায়েলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।