পরমাণু ইস্যুতে কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে তেহরান

আব্বাস আরাঘচি। ছবি: সংগৃহীত
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে তেহরান তার সহযোগিতা বন্ধ করেনি। বরং নতুন কাঠামোর আওতায় এ সম্পর্ক পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১২ জুলাই) তেহরানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাঙ্গণে বিদেশি রাষ্ট্রদূত, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রধানদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন আরাঘচি।
তিনি বলেন, “ইরান এনপিটি-র (পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) একটি দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে সবসময় আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা করে এসেছে। আমাদের এই সহযোগিতা এখন নতুনভাবে জাতীয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কাউন্সিল (এসএনএসসি) দ্বারা পরিচালিত হবে।”
সম্প্রতি ইরানের পার্লামেন্ট এক বিল অনুমোদন করেছে যার ফলে আইএইএ আর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে স্বাভাবিক নিয়মে পরিদর্শন করতে পারবে না। বিলটি পাস হয় ২৫ জুন, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির ঠিক আগের দিন। পরবর্তীতে ২ জুলাই এটি অনুমোদন করেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
এই প্রেক্ষাপটেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের সহযোগিতা বন্ধ হয়নি, বরং এখন থেকে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল প্রতিটি অনুরোধ পৃথকভাবে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।”
পরিদর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের কিছু পারমাণবিক স্থাপনা আক্রমণের শিকার হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় যেকোনো সময় তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। সেসব স্থানে পরিদর্শকদের পাঠানো হলে তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।”
আরাঘচি আরও বলেন, “ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। প্রায় ১২০টি দেশ ইরান-বিরোধী মার্কিন ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা করেছে।”
কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। তবে তার আগে অপর পক্ষকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা সত্যিকারের কূটনীতি চায়, কেবল নিজেদের লক্ষ্য পূরণের জন্য নয়।”
তিনি ইঙ্গিত করে বলেন, ১৩ জুন ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর সময়ে রোমে আইএইএ’র সঙ্গে ছয় দফা আলোচনার প্রস্তুতি চলছিল। “এই প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক যুদ্ধ প্রমাণ করেছে—বিকল্প কিছু নয়, কূটনীতিই একমাত্র পথ।”