রোববার ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, পৌষ ৭ ১৪৩২, ০১ রজব ১৪৪৭

ব্রেকিং

কবি নজরুলের পাশে শায়িত হাদি প্রিয় হাদি, তুমি থাকবে প্রতিটি বাংলাদেশির বুকের মধ্যে: প্রধান উপদেষ্টা লাখো জনতার অংশগ্রহণে ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন এ কে খন্দকার ছিলেন ‘অবিস্মরণীয় সৈনিক’: শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা সুদানে নিহত ছয় সেনা সদস্যের মরদেহ ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের উপ সেনাপতি এ কে খন্দকারের প্রয়াণ রিমান্ড শেষে কারাগারে সাংবাদিক আনিস আলমগীর লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার বসতঘরে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ, শিশুর মৃত্যু সহিংসতার পোস্ট: অভিযোগ করার আহ্বান সুরক্ষা এজেন্সির দিপু দাসকে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেন ফ্লোর ইনচার্জ: র‌্যাব ‘ধর্ম অবমাননা’: ময়মনসিংহে শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় গ্রেপ্তার ৭ আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরাইলি হামলায় নিহত ৫ মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও প্রবাসী দিবস উদযাপন সিরিয়ায় ৭০টিরও বেশি আইএস লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন হামলা

শিশু

কাজী নজরুল ইসলামের শৈশবের গল্প

 প্রকাশিত: ১১:০৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কাজী নজরুল ইসলামের শৈশবের গল্প

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন মসজিদের ইমাম ও দরগার খাদেম। ছোটবেলা থেকেই নজরুল ছিলেন দুরন্ত ও কৌতূহলী স্বভাবের।

শৈশবে নজরুলের পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ছিল না। মাত্র নয় বছর বয়সে তিনি বাবাকে হারান, ফলে পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। সংসারের অভাব-অনটন দূর করতে তিনি স্থানীয় মক্তবে পড়াশোনার পাশাপাশি মসজিদের মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন। কিন্তু এর মধ্যেও তাঁর জ্ঞানার্জনের আগ্রহ ছিল অগাধ।

গ্রামের মক্তবে আরবি, ফারসি ও ইসলামি শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি নজরুল স্থানীয় লেটোর দলে যোগ দেন। এই লেটো দলে গান গাওয়া, নাটক লেখা ও অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর সাহিত্য ও সঙ্গীতের প্রতি প্রবল আকর্ষণ তৈরি হয়। তিনি খুব দ্রুত কবিতা ও গান রচনায় দক্ষ হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রতিভা দেখে দলের সবাই অবাক হতেন।

কিছুদিন পর তিনি গ্রামের স্কুল ছেড়ে আসানসোলের রানীগঞ্জ সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু সংসারের চাপে পড়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি স্কুল ছেড়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ৪৯ নম্বর বেঙ্গল রেজিমেন্টে কাজ করেন। তবে তাঁর শৈশবের সেই দুঃসাহসী ও কৌতূহলী মনোভাব সেনাবাহিনীতেও স্পষ্ট ছিল।

শৈশব থেকেই নজরুল ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী। একবার গ্রামের এক জমিদার গরিব চাষিদের ওপর অন্যায় করছিলেন। ছোট্ট নজরুল সে ঘটনা দেখেই প্রতিবাদ করেন এবং চাষিদের পক্ষ নেন। তাঁর সাহস দেখে গ্রামের মানুষ বিস্মিত হন।

শৈশবের অভাব, কষ্ট ও সংগ্রামই ভবিষ্যতে তাঁকে বিদ্রোহী করে তোলে। পরে তিনিই হন বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি, যিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর তুলে ধরেন।

নজরুলের শৈশব কেবল দুঃখ-দুর্দশার গল্প নয়, বরং তা এক অসাধারণ প্রতিভার উত্থানের গল্প। ছোটবেলার সেই সংগ্রামই তাঁকে বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব করে তুলেছিল।