রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২১ ১৪৩২, ১০ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

শিশু

ছোট্ট সা‘দের ঈদ

বিনতে ইসমাঈল

 প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৩০ মার্চ ২০২৫

ছোট্ট সা‘দের ঈদ

ছোট্ট সা‘দ এবার মহা খুশি। কারণ আব্বু-আম্মু এই রমযানে তাকে রোযা রাখতে দিয়েছেন। এবার সে মোট ১০টা রোযা রেখেছে। আজ আব্বু বলেছিলেন, সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ উঠবে। তাই সে সকাল থেকে উদগ্রীব হয়ে আছে, কখন সন্ধ্যা হবে, কখন সে ঈদের চাঁদ দেখবে!

দেখতে দেখতে দিন ফুরিয়ে এল। ইফতারের সময় হল। আজ ইফতারের প্রতি যেন তেমন কোনো আগ্রহ নেই সা‘দের। তার সব আগ্রহ এখন ঈদের চাঁদের প্রতি। তাইতো সে কোনোরকম খেজুর আর শরবত খেয়েই বড় ভাইয়াকে নিয়ে ছাদে চলে গেল। ভাইয়াটা তার অনেক ভালো। সবসময় তাকে সঙ্গ দেয়। তার বন্ধুরাও সবাই তার সাথে ছাদে উঠল।

সবাই মিলে চাঁদ তালাশ করতে লাগল। সা‘দ তো হয়রান, পেরেশান। চাঁদটা কোথায় গেল! দেখতে পাচ্ছে না কেন! সবাই খুঁজছে। কিন্তু চাঁদটা চোখেই পড়ছে না। সবার কেমন যেন মন খারাপ হয়ে গেল। তাহলে কি চাঁদ উঠেনি। আগামীকাল তাহলে ঈদ হবে না। হঠাৎ ভাইয়ার চোখে পড়ল চাঁদটি। চাঁদ, চাঁদ বলে সবাইকে ডাকলেন ভাইয়া। সবাইকে চাঁদ দেখালেন। সা‘দের চাঁদ দেখতে অবশ্য বেশ বেগ পেতে হল। সুতার মতো চিকন চাঁদটা দেখা কি এত সোজা। চাঁদ দেখে সবার যে কী খুশি! কাল ঈদ, কাল ঈদ বলে পুরো ছাদ মাতিয়ে তুলল। ভাইয়া উঁচু আওয়াযে চাঁদ দেখার দুআ পড়লেন। ভাইয়ার সাথে সাথে সবাই পড়ল-

اَللّٰهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيمَانِ، وَالسَّلامَةِ وَالْإِسْلاَمِ، رَبِّيْ وَرَبُّكَ اللهُ.

(মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৩৯৭; মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদীস ৬৬১; আলমুনতাখাব মিন মুসনাদি আবদ ইবনু হুমাইদ, হাদীস ১০৩; কিতাবুদ দুআ, তবারানী, হাদীস ৯০৩)

ছাদ থেকে নেমে সবাই মসজিদে গেল। জামাতের সাথে মাগরিবের নামায আদায় করল।

মাগরিবের পর আব্বুকে ব্যাগ নিয়ে বের হতে দেখে সা‘দ বলল, আব্বু কোথায় যাচ্ছেন? বাবা বললেন, বাজারে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, ফেরার সময় তোমার জন্য নতুন কাপড়-জুতা নিয়ে আসব। সা‘দ তো শুনে মহা খুশি। আব্বু আমার জন্য নতুন জামা আনবে, নতুন জামা আনবে- বলে খুশিতে লাফাতে লাগল। খুশির সংবাদটা দাদুকে জানানোর জন্য এক দৌড়ে দাদুর ঘরে গেল। দাদুও শুনে খুব খুশি হলেন। তারপর বললেন, দাদুভাই, শরীফ তো তোমার খুব ভালো বন্ধু, তাই না! সা‘দ বলল, জ¦ী দাদু। ওকে আমি অনেক পছন্দ করি। আমার সবকিছু ওর সাথে ভাগাভাগি করি। দাদু তখন বললেন, তাহলে ঈদের দিন যদি এমন হয়, তোমার গায়ে নতুন কাপড় আর ওর গায়ে পুরাতন কাপড়, তখন তোমার কেমন লাগবে!

সা‘দ যেন হঠাৎ এমন প্রশ্নে থমকে গেল। কী উত্তর দিবে সে ভেবে পাচ্ছে না। তারপর বলল, কেন দাদু, ও পুরাতন কাপড় পরবে কেন! দাদু বললেন, ওর আব্বুর তো নতুন কাপড় কেনার পয়সা নেই। তাই ওর নতুন জামা হবে না। একথা শুনে সা‘দের খুব কান্না এল। দৌড়ে আব্বুর কাছে গিয়ে বলল, আব্বু নতুন জামা না পরলে কি ঈদ হবে না! ছেলের হঠাৎ এমন প্রশ্নে আব্বু তো অবাক! নিজেকে সামলে বললেন, অবশ্যই, কেন হবে না। ভালো উত্তম পোশাক দিয়েও ঈদ করা যায়। নতুন কাপড় শর্ত না। কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন বাবা?

সা‘দ তখন বলল, আব্বু, শরীফ আমার কত্ত ভালো বন্ধু! ওকে ছাড়া আমি কিচ্ছু করি না। সবকিছুতে আমরা দুজন এক থাকি। কিন্তু আমি যদি নতুন জামা কিনি, তাহলে ওর সাথে এবার আমার মিল হবে না। কারণ, দাদু বললেন, ওর আব্বুর নাকি ঈদের জামা কেনার পয়সা নেই। ও তো নতুন জামা কিনতে পারবে না। তাই আমিও নতুন জামা কিনব না। আমার বন্ধুর নতুন জামা হবে না, আমিও নতুন জামা কিনব না। আমার তো কত্ত জামা। ওগুলো থেকে ভালো একটা পরব! ছেলের এমন কথা শুনে আনন্দে বুকটা ভরে গেল সা‘দের বাবার। মনে মনে বললেন, আলহামদু লিল্লাহ। খুশিতে সা‘দকে তিনি কোলে তুলে নিলেন। আদর করে কপালে চুমু খেয়ে বললেন, ঠিক আছে বাবা।

বাজার থেকে ফেরার সময় তিনি সা‘দের জন্য জামা কিনলেন, সাথে শরীফের জন্যও কিনলেন। এনে রেখে দিলেন আলমারিতে।

সকাল হল, ঘুম থেকে চোখ মেলতেই সা‘দের মনে পড়ল আজ ঈদের দিন। মুহূর্তেই তার মনটা খুশিতে ভরে উঠল। ঘুম থেকে ওঠার দুআ পড়ল-

الحَمْدُ لِلهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ.

ফজরের নামায পড়ে সা‘দ কুরআন তিলাওয়াত করতে বসেছে। হাঠাৎ আব্বু সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন। বললেন, বাবা সা‘দ! এদিকে আসো। আব্বু সা‘দের হাতে নতুন জামা তুলে দিলেন, সাথে আরেকটা জামা। বললেন, এটা তোমার বন্ধু শরীফের জন্য। এ দেখে সা‘দ একেবারে নির্বাক হয়ে গেল। খুশিতে সে কোনো কথা বলতে পারছে না। বলল, আলহামদু লিল্লাহ। তারপর, আব্বুকে জড়িয়ে ধরে জাযাকাল্লাহ বলে দৌড় দিল শরীফদের বাসায়। সব খুলে বলল তাকে। বন্ধুর মহানুভবতায় শরীফ যারপরনাই আবেগআপ্লুত হল। তার দু’গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল দু’ফোঁটা আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার অশ্রু।

ঈদের নতুন জামা পেয়ে দুই বন্ধুর খুশি যেন আর ধরে না। পুকুরে গেল গোসল করতে। দুজনে গোসল করে ঈদের নতুন জামা পরে ভাইয়ার কাছে গেল। ভাইয়া দুজনকে আতর লাগিয়ে দিলেন। তারপর আম্মুর কাছে রান্নাঘরে গেল। রান্নাঘরের কাছে আসতেই ভেসে এল খাবারের সুবাস। দাদু তাদেরকে দেখে মুচকি হেসে বললেন, বসো দাদুভাই। সেমাই খাও। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে যাওয়া সুন্নত।

সা‘দ একটু ভাবল, বলল, একটু আসছি দাদু! পাশের বাড়ির কামালদেরকে ডেকে আনি। ওদের বাড়িতে নিশ্চয়ই আজ সেমাই রান্না হয়নি। দাদু শুনে খুশি হলেন। তাকে অনেক দুআ দিয়ে বললেন, যাও দাদুভাই ওদেরকে নিয়ে এসে একসাথে খাও।

খাওয়া শেষ করে সবাই একসাথে ঈদগাহের দিকে চলল। দাদু বললেন,  ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবীর বলা সুন্নত। সবাই ঈদগাহে যেতে যেতে তাকবীর বলল-

اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلٰهَ  إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ.

সা‘দের আব্বু ঈদের নামায পড়ালেন। সা‘দ যখন দূর থেকে দেখল, আব্বু মিম্বরে বসে খুতবা দিচ্ছেন, ওর তখন কী যে ভালো লাগল! আব্বুকে নিয়ে খুব গর্ব হল তার। সেও বড়দের মতো বসে পড়ল খুতবা শুনতে। তার বন্ধুরাও বসল।

আশেপাশে ছোটরা খেলা করছে, নানান জিনিস কিনছে, খাচ্ছে। ফেরিওয়ালারা বিভিন্ন খাবার, খেলনা বিক্রি করছে। সা‘দের বন্ধুরা বলল, চলো আমরাও উঠি। খুতবা শেষ হতে তো অনেক সময় লাগবে। দেখছ না, সবাই খেলছে, কত কিছু কিনছে। সা‘দেরও বসে থাকতে ভালো লাগছে, তা নয়, প্রচ- গরম। তারও কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু সে ভাইয়ার দিকে তাকাল অনুমতির জন্য। সে খুব ভালো ছেলে। বড়দের অনুমতি ছাড়া কিছু করে না। তার উপর আম্মু যে বারবার বলে দিয়েছেন, ভাইয়ার কথা মতো চলতে। ভাইয়ার সাথে সাথে থাকতে।

ভাইয়া বললেন, আরেকটু সবর কর সা‘দ। খুতবা পুরোটা শুনতে হয়। তুমি না জান, যত কষ্ট তত সওয়াব। তাই যত কষ্ট করে চুপচাপ খুতবা শুনবে, তত সওয়াব পাবে। সাথে সাথে সা‘দের সব কষ্ট যেন দূর হয়ে গেল। সে ঠিক করল যত কষ্টই হোক না কেন, সে পুরো খুতবা শুনে তারপর উঠবে। তার আগে নয়। সা‘দের বন্ধুরাও তাকে দেখাদেখি তাই করল। সবাই একসাথে খুতবা শুনল।

নামায শেষে সবাই একে অন্যকে ঈদ মোবারক বলতে লাগল। ভাইয়া বললেন, আমরা ঈদ মোবারক বলি, সাহাবায়ে কেরাম কী বলতেন জানো? তাঁরা বলতেন-

تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكُمْ.

(ফাতহুল বারী ২/৫১৭)

এতে সম্ভাষণ যেমন জানানো হত, দুআর ফায়েদাও হত। সাথে সাথে সওয়াবও হত। তাহলে, আমাদের ঈদ মোবারকের চেয়ে এই সম্ভাষণ বেশি উত্তম না! সা‘দের খুব ভালো লাগল সাহাবায়ে কেরামের সম্ভাষণ। বলল, এখন থেকে আমিও تَقَبّلَ اللهُ مِنّا وَمِنْكُمْ বলব।

সা‘দদেরকে দেখে আব্বু এগিয়ে এলেন। আব্বুর সাথে অনেক লোকও আছে। কেউ সা‘দের দাদা হয়, কেউ চাচ্চু হয়, কেউ বা ভাইয়া। ওরা সবাইকে সালাম দিল। সবাই সালামের জবাব দিলেন। ওদেরকে আদর করলেন। অনেকে ঈদ-সালামীও দিলেন। আব্বুও সা‘দের ভাইয়াসহ সবাইকে ঈদ-সালামী দিলেন।

এতগুলো টাকা পেয়ে সা‘দ ভাবছে- কী কিনবে? খেলনা কিনবে, নাকি আইসক্রীম? এসব ভাবতে ভাবতে তার মনে পড়ল দাদুর কথা। দাদু বলেছিলেন, অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে টাকা অপচয় করা অনেক গুনাহের কাজ। কত মানুষ টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারে না। আমাদের উচিত টাকা অপচয় না করে ওদেরকে সাহায্য করা। তাহলে ওদের যেমন অভাব দূর হবে, তেমনি ওদের মুখে হাসি ফোটালে আল্লাহও অনেক খুশি হবেন। বান্দাকে অনেক সওয়াব দান করবেন।

তাই সা‘দ ভাবল, এগুলো দিয়ে সে অপ্রয়োজনীয় কিছু কিনবে না। অল্প কিছু টাকা নিজের কাছে রেখে বাকি সব টাকা ওখানের কিছু গরীব শিশুদের মাঝে বিলিয়ে দিল। ওরা অনেক খুশি হল। ওদের মুখের হাসি দেখে সা‘দের খুব ভালো লাগল। তার মনে হল, এই না ঈদের আসল আনন্দ! বাকি টাকা দিয়ে নিজের জন্য একটা হাতঘড়ি আর একটা কলম কিনল। এগুলো তার পড়াশোনার কাজে লাগবে। তারপর আব্বু আর ভাইয়ার হাত ধরে বাসায় চলে এল।

ফেরার সময় আব্বু বললেন, আসার সময় আমরা এ পথ দিয়ে এসেছি। চলো আমরা ঐ পথ দিয়ে ফিরি। কারণ, এক পথ দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া আর ভিন্ন পথ দিয়ে ফেরা ঈদের দিনের সুন্নত।

বিকেলে ওর খুব ইচ্ছে হল নানার বাড়িতে যেতে। কিন্তু আম্মুকে বলতেই আম্মু বললেন, বাবা, সারাদিন কাজ করে আমি ভীষণ ক্লান্ত। আজ একটু বিশ্রাম নিই। অন্যদিন যাব ইনশাআল্লাহ! আম্মুর কথা শুনে সা‘দ আর পীড়াপীড়ি করল না। কারণ, আম্মু তার অনেক প্রিয়। সে আম্মুকে কষ্ট দিতে চায় না।

আম্মুর আগে বিশ্রাম হোক। তারপর সবকিছু। কিন্তু ঘরে বসে থাকতেও যে তার ভালো লাগছে না। তাই আম্মুর অনুমতি নিয়ে সে বন্ধুদের সাথে মাঠে খেলতে গেল। মাগরিবের আযান দিতেই খেলা বন্ধ করে নামায পড়ে বাসায় চলে এল। এভাবেই সা‘দের ঈদের দিন কাটল। রাতে শুয়ে শুয়ে সে সারাদিনের কথা ভাবছে। তার চোখে বারবার ভাসছিল টাকা পেয়ে গরীব বাচ্চাদের হাস্যোজ্জ্বল মুখগুলো। সে মনে মনে ভাবল, শুধু আজ নয়, সবসময় সে সবার মুখে হাসি ফোটাবে।

আলকাউসার