মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ৩০ ১৪৩২, ১৯ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

এডিটর`স চয়েস

হজ্ব ও কুরবানীর প্রাণ আল্লাহর স্মরণ

 প্রকাশিত: ২১:৫৭, ১৩ জুলাই ২০২০

হজ্ব ও কুরবানীর প্রাণ আল্লাহর স্মরণ

বছর ঘুরে আবারো আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে হজ্ব ও কুরবানী। বাইতুল্লাহর সৌভাগ্যবান মুসাফিরদের অনেকেই ইতোমধ্যে রওয়ানা হয়েছেন। অনেকে অপেক্ষায় আছেন। আল্লাহ তাআলা সকলকে হজ্বে মাবরূর নসীব করুন। আমীন। যাদের হজ্বের সফরের সুযোগ হয়নি তাদের জন্যও রয়েছে নেক আমলের অনেক সুযোগ। যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ দিন খুবই ফযীলতের। এই সময় গুনাহ ও পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার বিশেষ গুরুত্ব আছে। এবং ঈদের দিন ছাড়া বাকি নয় দিনের রোযা, বিশেষত নয় যিলহজ্বের রোযার বিশেষ ফযীলত হাদীস শরীফে উল্লেখিত হয়েছে। আর দশ যিলহজ্ব তারিখটি হচ্ছে ‘ইয়াওমুন নাহর’ কুরবানীর দিন। এই তারিখে মুসলমানগণ কুরবানী করেন এবং ঈদুল আযহা উদ্যাপন করেন। সব মিলিয়ে এই সময়টি মুসলমানদের কাছে খুবই আবেগ ও উদ্দীপনার।

আল্লাহর বান্দাগণ আল্লাহর হুকুমে তাঁর ইবাদতে মশগুল থাকবেন এর চেয়ে সহজ-সুন্দর বিষয় আর কী হতে পারে? তদ্রূপ এক আল্লাহর ইবাদতের সূত্রে বিশ্ব মুসলিম একতাবদ্ধ হবে এর চেয়ে যথার্থ বিষয়ও আর কিছু হতে পারে কি? হজ্ব ও কুরবানীর পরিচয় হচ্ছে এটি আল্লাহর ইবাদত। আর ইবাদতের প্রাণ হচ্ছে ‘আল্লাহর যিক্র’। তাই হজ্ব ও কুরবানীরও মূল কথা ‘যিকরুল্লাহ’- আল্লাহর স্মরণ। যে তালবিয়ার মাধ্যমে হজ্বের সূচনা হয় তা তো আল্লাহর স্মরণের এক গভীর ও সারগর্ভ কালিমা- ‘লাব্বাইকাল্লা-হুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নি‘মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা-শারীকা লাক’। আমি হাজির, ইয়া আল্লাহ! আমি হাজির। আমি হাজির, তোমার কোনো শরীক নেই, আমি হাজির। নিশ্চয়ই প্রশংসা ও দান তোমার, রাজত্ব তোমার, তুমি লা-শারীক। আল্লাহর স্মরণ, তাঁর প্রশংসনীয় গুণাবলী ও অনুগ্রহের স্মরণ, তাঁর রাজত্ব ও কর্তৃত্বের স্মরণ এবং তিনিই একমাত্র উপাস্য ও পালনকর্তা, প্রভু ও পরওয়ারদেগার, তাঁরই সকাশে অবনতশীর বান্দার আনুগত্য স্বীকারে ভাস্বর তালবিয়ার এই জ্যোতির্ময় বাক্যমালা। এই বাক্যমালাই উচ্চারিত হতে থাকে বান্দার কণ্ঠে হজ্বের দীর্ঘ সময় জুড়ে।

এরপর হজ্বের অন্যান্য কাজ- বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সাফা-মারওয়ার সায়ী, আরাফা-মুযদালিফার উকূফ, মিনার রমী সবই আল্লাহর স্মরণের এক একটি পর্ব। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- إِنمَا جُعِلَ رَمْيُ الجِمَارِ، وَالسعْيُ بَيْنَ الصّفَا وَالمَرْوَةِ لِإِقَامَةِ ذِكْرِ اللهِ. বাইতুল্লাহর তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ার সায়ী ও কংকর নিক্ষেপ এগুলো তো আল্লাহর স্মরণ কায়েম করবার জন্যই। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৮৮৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ৯০২ এই কাজগুলো যেহেতু একান্তই আল্লাহর বিধান তাই তা পালন করা কর্মগত যিক্র। এরপরও প্রত্যেকটি কাজের সাথে আছে মৌখিক যিক্রেরও মাসনূন নিয়ম। যেমন বাইতুল্লাহর তাওয়াফ শুরু করার সময় হজরে আসওয়াদের ইসতিলাম বা ইশারার সময় আছে তাকবীর, আছে তাওয়াফের হালতে যে কোনো যিক্র ও দুআর অনুমতি, বিশেষত হজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীর মধ্যে রয়েছে সূরা বাকারার বিখ্যাত দুআটি পড়ার নিয়ম। তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামায তো আল্লাহর যিক্রেরই এক শ্রেষ্ঠ উপায়। এরপর সাফা-মারওয়ায় সায়ীর শুরু-শেষে আছে তাকবীর ও দুআ। সবুজ দুই বাতির মাঝে দৌঁড়াবার সময়ও রয়েছে যিকির-দুআ। এরপর আরাফা-মুযদালিফায় উকূফের বড় কাজই হচ্ছে দুআ ও রোনাযারী, এরপর রমীর সময়ও আছে তাকবীরের মাসনূন নিয়ম।

এভাবে হজ্বের কাজগুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর যিক্র ও স্মরণেই উদ্ভাসিত। হজ্বের কাজসমূহ ছাড়াও এই সময়ের এক সাধারণ বৈশিষ্ট্য আল্লাহর স্মরণ। এ সময় আছে তাকবীরে তাশরীকের বিধান, অর্থাৎ নয় যিলহজ্ব ফজর থেকে ১৩ই যিলহজ্ব আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাযের পর একবার এই তাকবীর পাঠ করার বিধান নারী-পুরুষ সকলের জন্য- ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হাম্দ।’ (আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং আল্লাহরই জন্য সকল প্রশংসা) তাকবীর, তাহলীল ও তাহমীদের জ্যোতির্ময়তায় উদ্ভাসিত তাকবীরে তাশরীকের এই কালিমা। এরপর ঈদের দিন ঈদগাহে আসার সময় আছে তাকবীর। আরো আছে সালাতে ও খুতবায় অতিরিক্ত তাকবীর। এককথায় হজ্ব ও কুরবানীর মওসুম যেন বিশেষভাবে আল্লাহর স্মরণেরই মওসুম। যাতে আছে আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্বের স্মরণ, আল্লাহর শক্তি ও কর্তৃত্বের স্মরণ এবং আল্লাহর দান ও অনুগ্রহের স্মরণ। আছে আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্কের স্মরণ। আল্লাহই একমাত্র মাবুদ ও উপাস্য, প্রভু ও পরওয়ারদেগার, তাঁর কোনো শরীক নেই এবং তাঁর আনুগত্যের বিপরীতে আর কারোর আনুগত্য নেই, আছে এই মহা অঙ্গিকারের স্মরণ।

আছে নিজস্ব রুচি-অভিরুচি, যুক্তি-বুদ্ধি, বিচার-বিবেচনাকে আল্লাহর হুকুমের তাবে বানানো, আছে প্রচলিত-অপ্রচলিত নানা মত ও মতবাদ থেকে বিমুখ হয়ে এক আল্লাহর প্রতি সমর্পিত হওয়া এবং এক আল্লাহর আনুগত্যকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে শিরোধার্য করা। এই যে মহা শিক্ষা, আল্লাহর স্মরণ ও সমর্পণের এই যে অঙ্গিকার, ব্যক্তি ও সমাজের জন্য আজও তা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। পার্র্থিব জীবনে শান্তি ও পবিত্রতা আর আখিরাতের মুক্তি ও সফলতার জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের ব্যক্তি-জীবনের হতাশা ও অস্থিরতা, পারিবারিক জীবনের অশান্তি ও ব্যর্থতা আর সামাজিক জীবনের দ্বন্দ-সংঘাত- এইসবের মূলেই কি আল্লাহর বিস্মৃতি কার্যকর নয়? আল্লাহ-বিস্মৃতির প্রথম শাস্তি আত্মবিস্মৃতি।

তাই আল্লাহভোলা মানুষ ঐ পথে চলে, যে পথে তার ইহকাল-পরকাল দু’টোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের সম্বোধন করে ইরশাদ করেছেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ لْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَّ اتَّقُوا اللهَ اِنَّ اللهَ خَبِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْن وَ لَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِیْنَ نَسُوا اللهَ فَاَنْسٰىهُمْ اَنْفُسَهُمْ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفٰسِقُوْن. হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক আগামী কালের জন্য সে কী অগ্রিম পাঠিয়েছে এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চিতভাবে জেনে রেখ, তোমরা যা কিছু কর সে সম্পর্কে তিনি পুরোপুরি অবগত। তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছিল, ফলে আল্লাহ তাদেরকে আত্মভোলা করে দেন। বস্তুত তারাই অবাধ্য। -সূরা হাশর (৫৯) : ১৮-১৯ ঈমান, আল্লাহর ভয় এবং আখিরাতে জবাবদিহিতার অনুভূতিই হচ্ছে ঐ শক্তি, যা মানুষকে কল্যাণের পথে পরিচালিত করে। সমাজ ও রাষ্ট্র তো কিছু মানবম-লীরই অপর নাম। তাই অধিকাংশ মানুষ যদি ঈমান ও খোদাভীতির গুণে গুণান্বিত হয়ে সংযমী জীবন যাপন করে তাহলেই সমাজে শান্তি আসতে পারে। কাজেই ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণ আল্লাহ-বিস্মৃতির মধ্যে নয়, ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণ রয়েছে আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর আনুগত্যের মাঝেই। এই সত্য গভীরভাবে উপলব্ধি করা আজ অতি প্রয়োজন। এই উপলব্ধি অর্জিত হলে ইসলামে আল্লাহর স্মরণের যে অনুষঙ্গগুলো রয়েছে তার জাগতিক মূল্য অনুধাবন করাও সহজ হবে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে মুসলিমসমাজেরও কিছু মানুষের আছে হজ্ব-কুরবানীর মতো ইবাদত নিয়ে বিভ্রান্তি। তাদের কাছে এই ইবাদতগুলোকে মনে হচ্ছে অর্থের অপচয় (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। অর্থ-বিত্ত একজন মুসলিমের কাছেও এত ‘মূল্যবান’ কীভাবে হতে পারে যে, আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করাও অপচয় মনে হবে? মুসলিম কি আল্লাহর ইবাদত ছেড়ে অর্থের ইবাদতে মশগুল হতে পারে? আল্লাহর জন্য আল্লাহর হুকুম মোতাবেক ব্যয় হওয়াই তো অর্থের যথার্থ ব্যবহার, পক্ষান্তরে আল্লাহর নাফরমানীতে ব্যয় হওয়াই অপচয় ও অপব্যয়। অর্থের ব্যবহার সম্পর্কে একজন মুসলিমের দৃষ্টিভঙ্গি এমনটাই হতে হবে। এরপর আল্লাহর হুকুম মতো অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে যদি গভীরভাবে চিন্তা করা হয় তাহলে বোঝা যাবে যে, ব্যক্তি ও সমাজের জাগতিক কল্যাণও রয়েছে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী সম্পদ ব্যবহারের মাঝেই। ইসলামে যেমন আছে আল্লাহর ইবাদতে সম্পদ ব্যবহারের বিধান তেমনি আছে মানবসেবায় সম্পদ ব্যয়েরও বিধান। কে না জানে ইসলামের চার রোকনের একটি হচ্ছে যাকাত। ইসলামের ইবাদত-ব্যবস্থা এতটাই সুসংহত যে, এর দ্বারা যেমন ব্যক্তির মাঝে মানবিকতার বিকাশ ঘটে তেমনি সমাজ লাভ করে নানাবিধ কল্যাণ। ব্যক্তি ও সমাজের বাস্তব কল্যাণের কোনো খাত এমন নেই, যে খাতে অর্থ ব্যয়ের ভারসাম্যপূর্ণ বিধান ও নির্দেশনা ইসলামী শরীয়ায় নেই। একইভাবে অন্যায়-অনাচারের ক্ষেত্রে সম্পদ ব্যয়ের নিষেধাজ্ঞাও ইসলামী অর্থ-ব্যবস্থার এক বিস্তৃত ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

মদ-জুয়া, নাচ-গান, সীমাতিরিক্ত সজ্জা ও সৌখিনতা, অপ্রয়োজনীয় পর্ব-উৎসব, অপচয়-অপব্যয়, সম্পদহানি ইসলামে নিষিদ্ধ। সম্পদ ব্যয়ের এই নিষিদ্ধ ক্ষেত্র বন্ধ হলে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও সামষ্টিক পর্যায়ে যে ভালো কাজগুলো অর্থের অভাবে অসম্পন্ন থাকছে তা সম্পন্ন হওয়া সহজ হবে। তদদ্রূপ সম্পদের প্রদেয়গুলো যথাযথভাবে আদায় করা সম্ভব হবে। ধনী-দরিদ্রের অস্বাভাবিক বৈষম্য থেকে সমাজ রক্ষা পাবে। তবে এই সব কিছুর পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর ভয়, আখিরাতে জবাবদিহিতার অনুভূতি এবং ইসলামী অর্থ-ব্যবস্থার যথার্থতা ও কল্যাণধর্মিতার সঠিক উপলব্ধি। ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণে এই বিষয়গুলোর ব্যাপক চর্চা এখন সময়ের দাবি।

কাজেই আল্লাহর স্মরণের যে অনুষঙ্গগুলো আল্লাহর রহমতে আমাদের চর্চা ও অনুশীলনে রয়েছে এগুলোকে আরো শক্তিশালী করা, নিখুঁত ও ফলপ্রসূ করা আমাদের কর্তব্য। হজ্ব ও কুরবানীর প্রতি নিরুৎসাহিত করা নয়; বরং হজ্ব ও কুরবানী সঠিকভাবে পালনে উৎসাহিত করা এবং হজ্ব-কুরবানীর শিক্ষা জীবনের অন্যান্য অঙ্গনেও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টাই ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণের উপায়। এই বোধ যেমন সাধারণ মুসলিম জনগণের মাঝে জাগ্রত হওয়া দরকার তেমনি দরকার সমাজের চিন্তা ও বিবেককে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝেও জাগ্রত হওয়া। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তাঁর পরিচয় ও স্মরণ নসীব করুন এবং তাঁর ফরমাবরদারির মাধ্যমে দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ লাভের তাওফীক দান করুন।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল