ক্যান্ডি - ইতিহাস আর প্রকৃতির মিলনক্ষেত্র

ঐতিহাসিক মন্দির থেকে সবুজ পাহাড়ের কোলাকুলি—ক্যান্ডি শহর পর্যটকদের মুগ্ধ করে প্রকৃতি ও সংস্কৃতির অপরূপ দৃশ্যাবলীর মাধ্যমে।
শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি শহর ঘিরে রয়েছে এক অনন্য সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের গল্প, যা প্রতিবছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। ক্যান্ডির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ‘টেম্পল অব দ্য টুথ’, যেখানে গৌতম বুদ্ধের দাঁতের নিদর্শন সংরক্ষিত আছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এই মন্দিরটি প্রতি পাঁচ বছরে একবার সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এবং ১৯৮৮ সালে ইউনেস্কো এই স্থানকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ক্যান্ডি লেকের নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলী, পাহাড়ের ঘেরা সবুজ পরিবেশ, বর্ণিল পাখিদের কিচিরমিচির এবং ঐতিহাসিক কুইন্স হোটেলের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্থাপত্যশৈলী পর্যটকদের মুগ্ধ করে। কুইন্স হোটেলের পুরানো কাঠের সিঁড়ি, লিফট এবং দেয়ালে ঝুলানো ইতিহাসের ছবি যেন সময়ের এক যাত্রা। লেকের পাড়ে মাছেরা নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ায়, যা পর্যটকদের জন্য এক বিশেষ আনন্দের কারণ।
ভারত, ডেনমার্ক, ইতালি সহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ক্যান্ডির প্রকৃতি, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে উপভোগ করতে এখানে আসেন। ক্যান্ডির আশেপাশের বোটানিক্যাল গার্ডেন, পাহাড়ি পথগুলো পাখি প্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। সন্ধ্যার পর শহরের গাছে গাছে ভিড় করে পাখির কিচিরমিচির যেন প্রাণের সঙ্গীত।
ক্রীড়া প্রেমীদের জন্য পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম একটি বড় আকর্ষণ। পাহাড় ঘেরা সবুজ মাঠটি প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠেছে যেন এক অনন্য কৃত্রিম ভূস্বর্গ।
ক্যান্ডির মানুষও প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল, ফলে এখানে পাখি, মাছ, ময়ূররা নিরাপদে বসবাস করে। তবে বানরদের প্রতি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়, যারা কখনো কখনো দুষ্টুমি করতে পারে।
সব মিলিয়ে, ইতিহাস, ধর্ম, প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়ার এক অনবদ্য সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ক্যান্ডি শহর পর্যটকদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য, যেখানে ভ্রমণকারীরা প্রতিটি মুহূর্তে মুগ্ধ হন। তাই বলা যায়, ক্যান্ডিতে আসার জন্য হাজারো কারণ আছে, আর আসতেই হবে।