যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানির বাজার দখলে ভারতের নজর

যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তি শুল্কে চাপে বাংলাদেশ; তৈরি পোশাক রপ্তানির বাজারে সুযোগ দেখছে ভারত।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক রপ্তানির বাজারে বাংলাদেশের মতো প্রতিযোগী দেশের অংশীদারিতে চোখ রাখছে ভারত। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ায় ভারতের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)।
এসবিআইয়ের এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক বাজারে ভারতের অংশীদারি ৬ শতাংশ। এখান থেকে যদি প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছ থেকে আরও ৫ শতাংশ শেয়ার নিতে পারে, তাহলে ভারতের জিডিপিতে ০.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাসায়নিক খাতে ভারতের শক্তিশালী অবস্থানের পাশাপাশি বস্ত্র খাতে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা থাকায় দেশটির পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ সহজ হচ্ছে।
মার্কিন বাজারে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ওপর চাপ
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারসহ ১৪টি দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৩৬ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ভিয়েতনামের ওপর সম্ভাব্য পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ বললেও এখনো তা কার্যকর হয়নি। আর ভারতের সঙ্গে শিগগিরই নতুন বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ভারতের ক্ষেত্রে শুল্কহার ২০ শতাংশের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক রপ্তানি বাজারের অবস্থান
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে চীন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৫১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ভিয়েতনাম (১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার)। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের অংশীদারি বাড়ার সম্ভাবনা দেখছে দেশটির বিশ্লেষকেরা।
বাংলাদেশের পদক্ষেপ
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই ওয়াশিংটন সফরে যাবে। ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ওপর আরোপিত শুল্ক ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশে এনেছে।
শেষ পর্যন্ত কোন দেশের ওপর কত শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।