নির্বাচনী সহিংসতা ও অনিয়ম ঠেকাতে ইসির পাঁচ কমিটি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতির তদারকিতে পাঁচটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চার নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত এসব কমিটিতে ইসির সিনিয়র সচিব ও অতিরিক্ত সচিবসহ সাতজন করে কর্মকর্তা রয়েছেন। তবে এসব কমিটিতে প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি।
বুধবার (৯ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পৃথক পাঁচটি কমিটি গঠনের অফিস আদেশ জারি করা হয়। প্রতিটি কমিটির কার্যপরিধি তফসিল ঘোষণার পরবর্তী সময়ের নির্বাচন পরিচালনাভিত্তিক কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।
কমিটিগুলোর মাধ্যমে মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের তদারকি, সম্ভাব্য সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা নিরূপণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাজ তদারকি এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ার সমন্বয় করবে ইসি।
ইসির এই পাঁচটি কমিটি হলো:
১. মাঠ প্রশাসন সমন্বয় কমিটি
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের এই কমিটি নির্বাচনের আগে ও ভোটের সময় মাঠপর্যায়ের বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় করবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করাসহ নির্বাচনকালীন যেকোনো সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করবে।
২. আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং কমিটি
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত এ কমিটি নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকবে। সম্ভাব্য সহিংসতা নিরূপণ ও তা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেবে।
৩. ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রম তদারকি কমিটি
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠপর্যায়ের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নির্দেশিকা ও ম্যানুয়াল প্রস্তুতের কাজের সমন্বয় করবে। এছাড়াও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গঠিত ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রম তদারকি করবে।
৪. ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ তদারকি কমিটি
নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তদারকি করবে। এতে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
৫. প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও পর্যবেক্ষক সমন্বয় কমিটি
আবারও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত এ কমিটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার পদ্ধতি প্রণয়ন এবং বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করবে। দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের কার্যক্রম তদারকিও এ কমিটির আওতায় থাকবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটেই এ পাঁচটি কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।