সহায়তা কমলে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি শোচনীয় হবে: জাতিসংঘ

বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার সহায়তা কমলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম। সংস্থা দুটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, খাদ্য সহায়তা, জ্বালানি ও আশ্রয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তহবিল সংকট তৈরি হলে রোহিঙ্গাদের মানবিক পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে।
জাতিসংঘের এই দুই সংস্থা জানিয়েছে, সহায়তা কমে গেলে অনেক রোহিঙ্গা অনিশ্চিত নৌযাত্রার মাধ্যমে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পাড়ি জমাতে বাধ্য হতে পারে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউএনএইচসিআর ও আইওএমসহ ১১৩টি সংস্থা ২০২৫-২৬ সালের জন্য বাংলাদেশে আশ্রিত ১৪ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কমিউনিটির সহায়তায় ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার তহবিল আহ্বান করেছে।
এর আগে, চলতি মার্চের শুরুতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তার পরিমাণ কমতে পারে। সাহায্য কর্মীরা শরণার্থী শিবিরে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক দাতাদের সহায়তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসায় রোহিঙ্গাদের জন্য রেশন সংকুচিত হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্তই একমাত্র কারণ নয়, তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ২৫০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশে দেওয়া হয়েছে ২১০ কোটি ডলারের বেশি। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সহায়তা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেও রোহিঙ্গাদের জীবনরক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা এর আওতার বাইরে থাকবে বলে জানানো হয়েছিল।
তবে সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানায়, তহবিল সংকটের কারণে ১ এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্য সহায়তা জনপ্রতি সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ছয় ডলার করা হবে।
এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরকালে আশ্বস্ত করেছেন যে, রোহিঙ্গাদের জন্য রেশন কমানো ঠেকাতে জাতিসংঘ সম্ভাব্য সবকিছু করবে।