ইমাম-মুয়াজ্জিনদের চাকরি সুরক্ষায় আসছে মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা

মেট্রোপলিটন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “মসজিদ শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং এটি মুসলিম সমাজের হৃদস্পন্দন। সামাজিক সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা এবং মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে মসজিদের রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা।”
শুক্রবার (১৮ জুলাই) খুলনার নুরনগরে বিভাগীয় ইমাম সম্মেলন এবং খুলনা মেট্রোপলিটন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, “সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প চলছে। এরমধ্যে ৩৫০টি মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে, বাকি গুলো প্রক্রিয়াধীন। এসব কেন্দ্র সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সামাজিক সংহতি ও একতাবোধ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজ গঠনে মডেল মসজিদ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “যত বেশি মসজিদ তৈরি হবে, তত বেশি মুসল্লি তৈরি হবে। নামাজ মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে রক্ষা করে। ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পায়।”
তিনি আরও জানান, ‘মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। এতে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, যাতে কেউ অনায়াসে তাদের চাকরিচ্যুত করতে না পারে। খুতবার আগে সামাজিক সমস্যা ইসলামের আলোকে তুলে ধরার জন্য ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহমেদ আনোয়ারুল নজরুল এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান সিকদার।
উল্লেখ্য, চারতলা বিশিষ্ট খুলনা মেট্রোপলিটন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। এ মসজিদে পুরুষ, নারী, বয়স্ক ও অক্ষম ব্যক্তিদের ওজু ও নামাজের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হজযাত্রী নিবন্ধন ডেস্ক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, অটিজম শিশু কর্নার, মৃত ব্যক্তিদের গোসলের ব্যবস্থা, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, গেস্ট রুম, কনফারেন্স রুম এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা।
অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা সরকারি যাকাত ফান্ড থেকে নির্বাচিত দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে চেক বিতরণ করেন। পরে তিনি মডেল মসজিদের ফলক উন্মোচন করেন এবং বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।