নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস না করতে হুঁশিয়ারি বিএনপি নেতার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা নির্বাচনে অংশ নিতে ভয় পায় এবং নানা অজুহাতে নির্বাচন পেছাতে চায়, তারা যেন প্রেশার গ্রুপ হিসেবেই থেকে যায়। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংসের চেষ্টা করা উচিত নয়, বরং পরিবর্তন জনগণের মালিকানায় আসতে হবে।
শনিবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাসদ আয়োজিত ‘অপূর্ণ জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আমির খসরু বলেন, “আপনারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবেই থাকুন, কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করবেন না। পরিবর্তন জনগণের মালিকানায় আসতে হবে, চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠায়।” তিনি আরও বলেন, কোনও কমিশন বা ঢাকায় বসে থাকা ব্যক্তি দেশের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। জনগণই নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, “একটা কমিশন হয়েছে, সেখানে সবাই যাচ্ছে এবং মতামত দিচ্ছে। যতটুকু ঐক্যমত সম্ভব, ততটুকু করা হবে। আমরাতো সব বাকশাল করতে বসিনি। আমরা এক জায়গায় ঐক্যমত হয়ে তারপর নির্বাচন হবে। এরপর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
আলোচনা সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে চরম দক্ষিণপন্থার উত্থান ঘটেছে, ধর্মীয় ভাবাদর্শের প্রভাব বেড়েছে। গত ১৫ বছরে বাম প্রগতিশীলদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “এত কমিশন হয়েছে, কিন্তু বৈষম্যবিরোধী কমিশন গঠিত হয়নি। সরকার যদি চায়, তবে আগামী ৩-৪ মাসের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করে নির্বাচন সম্ভব। তবে নির্বাচন অনিশ্চিত থাকলে নৈরাজ্য দেখা দিতে পারে।”
গণফোরামের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, “আমরা অনেক আশা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু প্রতিদিন আমরা আশাহত হচ্ছি। জাতি জানতে চায়, কবে নির্বাচন? সরকার আমাদের সঙ্গে কানামাছি খেলছে। এরই মধ্যে একটা ‘কিংস পার্টি’ গঠন করেছে, জাতির সঙ্গে তামাশা করছে।”
সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, “নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়েই জনমনে সন্দেহ রয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী যুব সমাজ আজ খণ্ডিত হয়ে পড়েছে। তাদের একটি অংশ ‘বাংলাদেশের জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’ গঠন করেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আছে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।