কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা বেড়েছে, মে মাসে সংগ্রহ ২০ টন

ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায় বিকল্প নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনায় ঝুঁকছে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।
বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা মজুদের প্রবণতা বাড়ছে। মে মাসে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মিলিয়ে মোট ২০ টন সোনা কিনেছে, যা আগের মাসগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার প্রতি ঝুঁকছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্যমতে, মে মাসে সবচেয়ে বেশি সোনা কিনেছে কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংক—৭ টন। ফলে ব্যাংকটির মোট সোনার মজুত দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টনে। চলতি বছরের শুরু থেকে তাদের সোনার মজুত বেড়েছে ১৫ টন।
তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একই সময়ে ৬ টন সোনা কিনেছে, ফলে তাদের চলতি বছরের মোট সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১৫ টনে। সবচেয়ে বড় নিট ক্রেতা দেশ পোল্যান্ড, যারা এ বছর এখন পর্যন্ত ৬৭ টন সোনা কিনেছে। শুধু মে মাসেই পোল্যান্ড কিনেছে ৬ টন সোনা।
এ ছাড়া চীনের পিপলস ব্যাংক ও চেক প্রজাতন্ত্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উভয়েই মে মাসে ২ টন করে সোনা কিনেছে।
সোনা বিক্রির তালিকায় শীর্ষে আছে সিঙ্গাপুর। মে মাসে তারা বিক্রি করেছে ৫ টন। এর পরে রয়েছে উজবেকিস্তান ও জার্মানি, যারা বিক্রি করেছে ১ টন করে। চলতি বছর সবচেয়ে বড় নিট বিক্রেতা দেশ উজবেকিস্তান, যাদের মোট বিক্রি ২৭ টন। সিঙ্গাপুর বিক্রি করেছে ১০ টন।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫’ অনুযায়ী, অংশগ্রহণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে সোনার মজুত আরও বাড়ানো হবে। তাঁদের ৯৫ শতাংশ মনে করেন, আগামী ১২ মাসে বৈশ্বিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা মজুত বাড়বে।
এই প্রত্যাশা আরও প্রতিফলিত হয়েছে ‘অফিশিয়াল মনিটারি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ফোরাম’-এর গ্লোবাল পাবলিক ইনভেস্টর ২০২৫ প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ৩২ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সোনা মজুত বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার অস্থিরতার সময় সোনা একটি নিরাপদ বিকল্প সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রাখছে।