দাউদকান্দিতে ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক আরেক হত্যা মামলা

সুলতান মিয়া হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি-চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা, অজ্ঞাতনামা ১৫০ জন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় ১১ মাস পর কুমিল্লার দাউদকান্দিতে সুলতান মিয়া (৪০) নামে এক অটোরিকশাচালককে হত্যার ঘটনায় নতুন করে মামলা হয়েছে। গত ৩০ জুন নিহতের স্ত্রী রেহানা বেগম দাউদকান্দি মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী নিহতের পরিবারের অভিযোগ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় কুমিল্লা‑১ (দাউদকান্দি‑তিতাস) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সবুর, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী ও দাউদকান্দি পৌরসভার সাবেক মেয়র নাইম ইউসুফ‑সহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল গত বছর
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন সুলতান মিয়া। অভিযোগ রয়েছে, সেসময় আওয়ামী লীগের সমর্থক কয়েকজন অস্ত্রধারী বাজারজুড়ে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া চালান এবং আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। গুলিতে গুরুতর আহত সুলতানকে প্রথমে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৭ আগস্ট তিনি মারা যান। সেদিনই শাহবাগ থানা‑পুলিশ লাশের সুরতহাল শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
মামলার দেরির কারণ
রেহানা বেগম জানান, পরিবারটির প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে। মামলা চালাতে আর্থিক ব্যয় বহন করা কঠিন হবে ভেবে এত দিন তিনি মামলা করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মামলা করতে বাধ্য হন।
আগের হত্যা মামলা ও তদন্ত‑অগ্রগতি
ওসি জুনায়েত চৌধুরী বলেন, সুলতান মিয়া হত্যার বাইরে গত বছর মো. রিফাত ও মো. বাবু হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছিল। ওই মামলাগুলোর কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নতুন মামলাটিও গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।