সুবহানাল্লাহ, ইনশাআল্লাহ্, নাউজুবিল্লাহ্—কোনটা কখন বলবেন

প্রতিদিনের প্রয়োজনে আমাদের অনেক ইসলামী পরিভাষা ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেসব পরিভাষার সুন্দর ব্যবহার, পরিচয় ও সঠিক ব্যাখ্যা জানা না থাকার কারণে যথাসময়ে মানানসই ব্যবহার করতে পারি না। তাই এ বিষয়ে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করা হলো।
প্রতিদিনের ব্যবহারিক ইসলামী পরিভাষা—
বিসমিল্লাহ্: কোনো ভালো কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ্ পাঠ করতে হয়।
আলহামদুলিল্লাহ: আলহামদুলিল্লাহ্ শব্দের অর্থ সব প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যে কোনো সুখবর বা ভালো অবস্থার সংবাদের বিপরীতে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন—ভাই আপনি কেমন আছেন? জবাবে বলা উচিত, আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
পছন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলতে হয়—‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি বিনিয়মাতিহি তাতিম্মুস সালিহাত।’
অপছন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলতে হয়—‘আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল।’ অর্থ : যে কোনো অবস্থায় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। (সূত্র : তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
ইনশাআল্লাহ্: ইনশাআল্লাহ্ শব্দের অর্থ—মহান আল্লাহ যদি চান, তাহলে...। ভবিষ্যতে হবে, ঘটবে বা করব—এমন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ্ বলা সুন্নাত। যেমন—ইনশাআল্লাহ্ আমি আগামীকাল আপনার কাজটি করে দেবো।
মাশাআল্লাহ: মাশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, আল্লাহ যেমন চেয়েছেন। এটি আলহামদুলিল্লাহ শব্দের মতোই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে বিস্ময়কর কোনো কিছু দেখলে এই শব্দ বলা যায়। অর্থাৎ যে কোনো সুন্দর ও ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন—মাশাআল্লাহ, তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছো।
সুবহানাল্লা্হ: সুবহানাল্লাহ্ শব্দের অর্থ আল্লাহ পবিত্র ও সুমহান। আশ্চর্যজনক ভালো কোনো কাজ হতে দেখলে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন—সুবহানাল্লাহ্! আগুনে পুরো ঘর পুড়ে গেলেও পবিত্র কোরআন অক্ষত আছে!
নাউজুবিল্লাহ্: নাউজুবিল্লাহ্ শব্দের অর্থ হলো, আমরা মহান আল্লাহর কাছে এর থেকে আশ্রয় চাই। যে কোনো মন্দ ও গুনাহর কাজ দেখলে তার থেকে নিজেকে আত্মরক্ষার্থে এই শব্দ বলা হয়ে থাকে।
আসতাগফিরুল্লাহ্: আসতাগফিরুল্লাহ্ শব্দের অর্থ আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো অন্যায় বা গুনাহ হয়ে গেলে আমরা এটি বলব।
ইন্নালিল্লাহ্ বা ইন্নালিল্লাহি্ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন: এ বাক্যের অর্থ হলো, নিশ্চয়ই আমরা মহান আল্লাহর জন্য এবং আমরা তার দিকেই ফিরে যাব। যে কোনো দুঃসংবাদ বা বিপদের সময় ইন্নালিল্লাহ্ পড়ার কথা রয়েছে।
লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্: বাক্যটির অর্থ হলো, মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া আর কোনো আশ্রয় ও সাহায্য নেই। শয়তানের দুরভিসন্ধিমূলক কোনো প্রতারণা ও তাড়না থেকে বাঁচার জন্য এই দোয়াটি পড়া হয়।
সালাম: কারো সঙ্গে দেখা হলে হাই-হ্যালো না বলে বলুন, আসসালামু আলাইকুম। (আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)।
থ্যাংক ইউ নয়, জাজাকাল্লাহ্: কাউকে ধন্যবাদ জানাতে থ্যাংক ইউ নয়, জাজাকাল্লাহ্ বলুন। অথবা আরো বৃদ্ধি করুন—জাজাকাল্লাহু খায়রান। (মহান আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন)।
আল্লাহ হাফেজ ও ফি-আমানিল্লাহ: কারো কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় ‘টা টা’ না বলে বলুন, আল্লাহ হাফেজ (মহান আল্লাহ সর্বোত্তম হেফাজতকারী) বা ফি-আমানিল্লাহ (তোমাকে আল্লাহর নিরাপত্তায় দিয়ে দিলাম)।