৭০% ভোটারের রায় উপেক্ষিত, পিআর ছাড়া বিকল্প নেই

ইসলামি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমেই জনগণের ভোটের প্রকৃত মূল্যায়ন সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে ঢাকা-৭ আসনের উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ এবং আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “আমাদের দেশে অতীতে গড়ে ৩০ শতাংশ ভোট পেয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সরকার গঠন করেছে। অথচ বাকি ৭০ শতাংশ ভোটার সেই সরকারকে ভোট দেয়নি। তাদের ভোটের কোনো মূল্যায়ন হয়নি। এটা গণতন্ত্র নয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে প্রত্যেক নাগরিকের ভোটের মূল্যায়ন হবে। তাই জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে এই পদ্ধতির বাইরে কোনো বিকল্প নেই।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন এপ্রিল হোক কিংবা ফেব্রুয়ারিতে, জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত রয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা দেশে নতুনরূপে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে, যা জনগণ আর মেনে নেবে না।”
চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে জামায়াতের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর কী ভূমিকা ছিল, তা দল আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করেনি। কারণ, আমরা এই অভ্যুত্থানকে দলীয় রূপ দিতে চাই না। এটা ছিল ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান। জামায়াত কেবল ছাত্রদের পাশে ছিল—নিরাপদ আবাসন, খাবার এবং আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছিলাম।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়েও বক্তব্য দেন তিনি। বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে প্রবাসীরা। অথচ তাদের ভোটাধিকার নেই। তাই প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ভোটের ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৭ আসনের নির্বাচন পরিচালক আব্দুর রহমান।
এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা-৭ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ড. শামীমুল বারী এবং চকবাজার, বংশাল ও কোতোয়ালী থানার আমির, সেক্রেটারি ও অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।