নির্বাচন নির্বাচন করে আমাদের সামনে মুলা ঝোলানো হচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

“শুধু নির্বাচন, নির্বাচন আর নির্বাচন করে আমাদের সামনে একটি মুলা ঝোলানো হচ্ছে। আমরা এ ধরনের কোনো ধোঁকাবাজিতে বিশ্বাস করব না”— এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই, আমরা নির্বাচিত সরকার চাই, তবে এ গণঅভ্যুত্থানে যারা হত্যা করেছে— শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো লুকিয়ে আছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে নীলফামারী জেলা শহরে “জুলাই বিপ্লব”-এ শহীদ রুবেল ও সাজ্জাদের কবর জিয়ারত শেষে এবং সৈয়দপুরের উর্দুভাষী ক্যাম্প পরিদর্শনের পর এক পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ। সেখানে তিনি দাবি করেন, “শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।”
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এ গণঅভ্যুত্থানের শরিকদের মনের দাউ দাউ করে জ্বলা আগুন নিভবে না।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনে যেতে হবে। এজন্য একটি নতুন সংবিধান লাগবে। বর্তমান সংবিধান হচ্ছে আওয়ামী লীগের সংবিধান, মুজিববাদের সংবিধান। এ সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। এটি আমাদের অধিকার রক্ষা করতে পারে নাই, আমাদের যখন রাস্তায় মারা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, তখন মানবাধিকার রক্ষা করতে পারে নাই। এ সংবিধান জনগণের সংবিধান নয়।”
উত্তরবঙ্গের শহীদ আবু সাইদের আত্মত্যাগকে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, “উত্তরবঙ্গ বৈষম্যের শিকার। তারুণ্য শক্তিকে অবমূল্যায়ন করে কেউ এগিয়ে যেতে পারবে না।” তিনি “জুলাই পদযাত্রা”য় সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, “ককটেল হোক আর বুলেট, সবকিছু নস্যাৎ করে এনসিপি এগিয়ে যাবে।” শহীদ রুবেলের আত্মত্যাগকে অবিস্মরণীয় আখ্যা দিয়ে নাহিদ বলেন, “ছোট্ট ছোট্ট ছেলেরা যারা জীবন দিয়েছে, যারা পুলিশের বুলেট বুকে নিতে পারে, সন্ত্রাসীদের বুলেটের সামনে দাঁড়াতে পারে, যারা স্বৈরাচার হটাতে পেরেছে— তারা কি একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে পারবে না?”
তিনি আরও বলেন, “এদের জীবনদানের বিনিময়ে আমাদের একটি সুন্দর, স্বপ্নের, বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
নাহিদ ইসলাম জানান, এর আগেও তাদের অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে; কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। “হামলা করে নতুন রাজনীতিকে দমন করা যাবে না,” বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পথসভায় অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে হয়রানির প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ প্রশ্ন তোলেন, “অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে বিপ্লবের পক্ষে থাকা শক্তি, শহীদ পরিবার এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কে দেবে?”
নীলফামারী শহরে অনুষ্ঠিত এ পথসভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপি জেলা আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতারা, তাদের মধ্যে ছিলেন সারজিস আলম, আবু সাইদ লিওন প্রমুখ।