রাবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মী লাঞ্ছনার অভিযোগ

চারুকলা অনুষদের সভায় মতবিরোধের জেরে অধ্যাপক আবদুস সোবাহানকে বল প্রয়োগে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সহকর্মী আবদুস ছালামের বিরুদ্ধে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের এক সাধারণ সভায় সহকর্মীর বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ এক অধ্যাপককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষ্ঠিত ২৯তম সাধারণ সভায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগকারী শিক্ষক চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সোবাহান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচারকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত হলেন মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুস ছালাম, যিনি বর্তমানে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে আছেন।
অভিযোগপত্রে আবদুস সোবাহান উল্লেখ করেন, সভায় চারুকলা অনুষদে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম চালুর প্রস্তাব উঠলে তিনি এর বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কোর্স চালু হলে অনুষদের স্বকীয়তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। এ সময় রাজনৈতিক প্রসঙ্গ টেনে তিনি মন্তব্য করেন, এসব কোর্স ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের’ সময় চালু হয়েছিল।
তার এই মন্তব্যের প্রতিবাদে অধ্যাপক মোস্তফা শরীফ আনোয়ারের সঙ্গে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর কিছুক্ষণ পর আবদুস ছালাম উত্তেজিত হয়ে তাঁকে (সোবাহানকে) সভা থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেন এবং তাঁর কথায় আপত্তি জানালে আবদুস ছালাম জোর করে তাঁকে চেয়ার থেকে তুলে আবার বসিয়ে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক সোবাহান প্রথম আলোকে বলেন, “সব সহকর্মীর সামনে এভাবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন এবং আমার জন্য মারাত্মক অপমানজনক।”
অভিযুক্ত আবদুস ছালাম বলেন, “অধ্যাপক সোবাহানকে চেয়ারে বসিয়েছি, কিন্তু লাঞ্ছনার উদ্দেশ্যে নয়। তিনি সভায় উত্তেজিত হয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে থাকেন, যা সভার প্রেক্ষাপটে অনুপযুক্ত ছিল। তখন আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডিনকে বলি এবং পরে তাঁকে শান্ত করতে ওইভাবে বসিয়ে দিই।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, “সভায় একটি বিষয় নিয়ে সবাই একমত হলেও অধ্যাপক সোবাহান ভিন্নমত পোষণ করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে ধীরভাবে কথা বলতে অনুরোধ করা হয়। তিনি তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে সহকর্মীর দিকে তেড়ে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই ছালামসহ কয়েকজন তাঁকে আসনে বসিয়ে দেন।”
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসন তদন্তে নেমেছে কি না, তা নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা চলছে।