ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব: গাজায় শান্তি আসবে কি?

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ ও আশা একসঙ্গে বিরাজ করছে।
গাজায় চলমান সংঘর্ষ থামানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে এবং শান্তি আলোচনা শুরু হতে পারে।
তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস প্রস্তাব গ্রহণের আগ্রহ দেখালেও কিছু সংশোধনী দাবি করেছে। অপর দিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের দাবিগুলো ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। যদিও তিনি কাতারে আলোচনা করার জন্য প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছেন।
হামাসের প্রধান দাবি:
১. গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর কার্যক্রম বন্ধ করা। কারণ, সাম্প্রতিক সময় গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
২. ইসরায়েলি সেনাদের গাজা থেকে প্রত্যাহার, যেহেতু গত মার্চে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের আগে যে অবস্থান ছিল, সেখানেই ফিরে যাওয়ার দাবি।
৩. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যুদ্ধবিরতির স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করার অনুরোধ।
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত প্রস্তাবের মূল অংশ:
হামাসের হাতে থাকা ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি ও ১৮ জন জিম্মির মরদেহ ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে, বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিরাও মুক্তি পাবে। ত্রাণ বিতরণ বাড়ানোর ব্যবস্থাও প্রস্তাবে উল্লেখ আছে। পাশাপাশি, ইসরায়েল ধাপে ধাপে গাজার কিছু অংশ থেকে সেনারা সরিয়ে নেবে।
ইসরায়েলের অবস্থান:
নেতানিয়াহু প্রস্তাবে সম্মত হলেও হামাসের সংশোধনী প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সব জিম্মি মুক্ত না হওয়া এবং হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ করবেন না। নেতানিয়াহুর যুদ্ধনীতির পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থও রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি:
গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী অন্তত ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে, যেখানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা কেমন?
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদনান হায়াজনে আল–জাজিরা কে বলেন, ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতি স্বার্থহীন এবং তারা গাজাকে জনশূন্য করার পরিকল্পনা করছে। ফলে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি ছাড়তে রাজি নয়।