শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২০ ১৪৩২, ০৮ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

ছোট নেকী ও ছোট গোনাহ সূরা যিলযালের বার্তা

মাওলানা আহমাদ হুসাইন ইউশা

 আপডেট: ২২:৩৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

ছোট নেকী ও ছোট গোনাহ সূরা যিলযালের বার্তা

فَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَیْرًا یَّرَهٗ، وَ مَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا یَّرَهٗ

যে অণু পরিমাণও নেক আমল করবে, সে তা দেখতে পাবে। আর যে অণু পরিমাণও মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে। -সূরা যিলযাল (৯৯) : ৭-৮

 

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যেমন দামী, তেমনই জীবনের ছোট-বড় প্রতিটি আমলই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। একটি গোনাহ যেমন অনেক বড় বিপদের কারণ হতে পারে, তেমনি একটি বাহ্যত ছোট নেকীও জান্নাত লাভের কারণ হতে পারে। বান্দার অন্তর যদি সমর্পিত হয় আর আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে চলতে সে সচেষ্ট থাকে, তাহলে ছোট আমলের বিনিময়েও আল্লাহ তাআলা অনেক বড় সওয়াব দান করেন। পক্ষান্তরে অন্তর যদি হয় উদাসীন তাহলে ছোট গোনাহও ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি বিন্দুমাত্র যুলুম করেন না। কোনো কাজ যত ক্ষুদ্রই হোক, আল্লাহর জন্য করা হলে তা আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়। আল্লাহ অবশ্যই বান্দাকে তার বিনিময় দান করেন। আর আল্লাহ তাআলা এমন ‘দাতা’ যে, ক্ষুদ্র বান্দা তাঁর জন্য কিছু করবে, আর তিনি বান্দাকে কিছু দেবেন না; কোনো বিনিময় দেবেন না- আল্লাহর দরবারে এমনটি কখনোই হতে পারে না। তাই আয়াতে কারীমায় ইরশাদ হয়েছে-

فَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَیْرًا یَّرَهٗ، وَ مَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا یَّرَهٗ.

যে অণু পরিমাণও নেক আমল করবে, সে তা দেখতে পাবে। আর যে অণু পরিমাণও মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে। -সূরা যিলযাল (৯৯) : ৭-৮

আল্লাহর জন্য অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বান্দা ‘কিছু করা’- এ কথাটির পরিধি কত যে বিস্তৃত হতে পারে তা যেমন আমাদের ধারণায় নেই, ঠিক তেমনি সামান্য বিষয়ের বিনিময়েও আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাকে যে কত বিপুল প্রতিদান দেওয়া হয় সে সম্পর্কেও আমাদের ধারণা নেই। সেইসাথে এটাও সত্য যে, যতটুকু ধারণায় আছে, তার অনুশীলন নেই।

আল্লাহ তাআলা ‘শাকির’ তথা বান্দার আমলের মূল্যায়ন করেন। কী পরিমাণ ছোট ও ক্ষুদ্র বিষয়ের প্রতিদানও আল্লাহ তাআলা দান করেন, তার একটি নমুনা হিসেবে আমরা নিম্নোক্ত হাদীসটি লক্ষ্য করতে পারি-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: الخَيْلُ لِثَلاَثَةٍ: لِرَجُلٍ أَجْرٌ، وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ، وَعَلَى رَجُلٍ وِزْرٌ، فَأَمَّا الَّذِي لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبِيلِ اللهِ، فَأَطَالَ لَهَا فِي مَرْجٍ أَوْ رَوْضَةٍ، وَمَا أَصَابَتْ فِي طِيَلِهَا مِنَ المَرْجِ أَوِ الرَّوْضَةِ كَانَتْ لَهُ حَسَنَاتٍ، وَلَوْ أَنَّهَا قَطَعَتْ طِيَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ، كَانَتْ أَرْوَاثُهَا حَسَنَاتٍ لَهُ، وَلَوْ أَنَّهَا مَرَّتْ بِنَهرٍ فَشَرِبَتْ وَلَمْ يُرِدْ أَنْ يَسْقِيَهَا، كَانَ ذَلِكَ لَهُ حَسَنَاتٍ، وَرَجُلٌ رَبَطَهَا تَغَنِّيًا وَسِتْرًا وَتَعَفُّفًا، وَلَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِي رِقَابِهَا وَظُهُورِهَا فَهِيَ لَهُ كَذَلِكَ سِتْرٌ، وَرَجُلٌ رَبَطَهَا فَخْرًا وَرِيَاءً وَنِوَاءً لِأَهْلِ الإِسْلاَمِ فَهِيَ وِزْرٌ "

وَسُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الحُمُرِ فَقَالَ: مَا أُنْزِلَ عَلَيَّ فِيهَا إِلّا هَذِهِ الآيَةُ الجَامِعَةُ الفَاذَّةُ: فَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَیْرًا یَّرَهٗ، وَ مَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا یَّرَهٗ.

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন: ঘোড়ার মালিক তিন প্রকার; একজনের জন্য ঘোড়া সওয়াবের কারণ। আরেকজনের জন্য বৈধ আবরণ। আর কারও জন্য হয় গোনাহের কারণ।

ঘোড়া তার জন্য সওয়াবের কারণ, যে তার ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তার জন্য নিয়োজিত রেখেছে। এমনকি ঘোড়ার মালিক সেই ঘোড়াকে কোনো উদ্যান বা চারণভূমিতে বেঁধে এসেছে। এই ঘোড়া সেখানে যা কিছু খায় তার জন্য ঘোড়ার মালিক নেকী লাভ করে। ঘোড়াটি যদি দড়ি ছিঁড়ে এক দুই টিলা অতিক্রম করে (কোথাও) বর্জ্য ত্যাগ করে, তাহলে এই বর্জ্যও ঘোড়ার মালিকের নেকীর কারণ হয়। ঘোড়াটি যদি কোনো নদী অতিক্রম করার সময় পানি পান করে- যদিও বা মালিকের পানি পান করানোর ইচ্ছা ছিল না- তবুও ঘোড়ার মালিক নেকী লাভ করে। আর যদি কোনো ব্যক্তি স্বচ্ছলতা, বৈধতা ও নির্মুখাপেক্ষিতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ঘোড়ার মালিক হয় এবং ঘোড়ার গর্দান ও পিঠ (অর্থাৎ ঘোড়া সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়ে) আল্লাহর হক আদায় করতে না ভোলে, তার জন্য ঘোড়া বৈধ উপকরণ। পক্ষান্তরে ঘোড়ার মালিকের উদ্দেশ্য যদি হয় গর্ব ও লৌকিকতা এবং অপর মুসলমান থেকে দূরত্ব বজায় রাখা, তাহলে এই ঘোড়া হবে গোনাহের কারণ।

অতঃপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কেউ জানতে চাইল গাধা সম্পর্কে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো বিধান আমার প্রতি অবতীর্ণ হয়নি। তবে আমার কাছে রয়েছে এমন একটি আয়াত, যা এব্যাপারে অত্যন্ত ব্যাপক ও অনন্য। তা এই-

فَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَیْرًا یَّرَهٗ، وَ مَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا یَّرَهٗ.

যে অণু পরিমাণও নেক আমল করবে, সে তা দেখতে পাবে। আর যে অণু পরিমাণও মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে। [সূরা যিলযাল (৯৯) : ৭-৮] -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৬৪৬

এই হাদীসের ভাষ্য গভীরভাবে লক্ষ্য করলে উপলব্ধি করা যায়, যে কাজ আল্লাহর জন্য করা হয় আল্লাহ তাআলা তাকে কতখানি ব্যাপ্তি দান করেন এবং তার খুঁটিনাটি বিষয়েরও নেকী ও বিনিময় দান করেন। এই হাদীসে ঘোড়ার মালিককে তার ঘোড়ার খাদ্য, পানি এমনকি বর্জ্য- সবকিছুর জন্য আলাদাভাবে নেকী দান করা হয়েছে। হাদীসের শেষ অংশ থেকে একথাও অনুভূত হয় যে, এমন ব্যাপকভাবে নেকী প্রদান শুধু ঘোড়ার সাথেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং যে কোনো পশু পালন; বরং যে কোনো কাজ, তা যদি সত্যিকারভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়, অন্তরে যদি থাকে সঠিক বোধ ও উপলব্ধি, তাহলে নিশ্চিতভাবেই সব কাজে মুমিনের জীবন হবে উদ্দেশ্যমুখী। আর এই চিন্তা-পদ্ধতি প্রয়োগ করে, জীবনের দৈনন্দিন কাজগুলোতেও সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করতে পারবে। ফলে তার জীবনের স্বাভাবিক কাজগুলোও নেক আমলে পরিণত হবে।

উপরের আলোচিত হাদীসটির ব্যখায় আল্লামা ইবনে হাজার রাহ. বলেন-

ووجه الحصر في الثلاثة أن الذي يقتنى الخيل إما أن يقتنيها للركوب أو للتجارة. و كل منهما إما أن يقترن به فعل طاعة الله وهو الأول ومعصيته وهو الأخير، أو يتجرد عن ذلك وهو الثاني.

অন্যস্থানে তিনি বলেন-

(قوله: و لم يرد أن يسقيها) فيه أن الإنسان يؤجر على التفاصيل التي تقع في فعل الطاعة إذا قصد أصلها و إن لم يقصد تلك التفاصيل.

এই উদ্ধৃতিগুলো থেকে বোঝা যায় যে, বান্দা যখন যেই নেক কাজ করে, তখন আল্লাহ তাআলা সেই কাজ সংশ্লিষ্ট খুঁটিনাটি বিষয়সমূহের নেকীও তাকে দান করেন। অর্থাৎ মূল নেক কাজের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ের জন্যও নেকী দান করেন। যেমন কেউ মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে, পথে তার গায়ে কাঁদাপানি ছিটল অথবা হোঁচট খেয়ে পড়ে ব্যাথা পেল তাহলে এই অবস্থার জন্যও আল্লাহ তাআলা তাকে আলাদা সওয়াব দান করবেন।

এজন্যই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে ছোট ছোট নেকীর ব্যাপারে সতর্ক করেছেন, উদ্বুদ্ধ করেছেন। মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসের অংশ এমন-

وَسَأَلْتُهُ عَنِ الْمَعْرُوفِ؟ فَقَالَ: لَا تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا، وَلَوْ أَنْ تُعْطِيَ صِلَةَ الْحَبْلِ، وَلَوْ أَنْ تُعْطِيَ شِسْعَ النَّعْلِ، وَلَوْ أَنْ تُفْرِغَ مِنْ دَلْوِكَ فِي إِنَاءِ الْمُسْتَسْقِي، وَلَوْ أَنْ تُنَحِّيَ الشَّيْءَ مِنْ طَرِيقِ النَّاسِ يُؤْذِيهِمْ، وَلَوْ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ، وَوَجْهُكَ إِلَيْهِ مُنْطَلِقٌ، وَلَوْ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ فَتُسَلِّمَ عَلَيْهِ، وَلَوْ أَنْ تُؤْنِسَ الْوَحْشَانَ فِي الْأَرْضِ، وَإِنْ سَبَّكَ رَجُلٌ بِشَيْءٍ يَعْلَمُهُ فِيكَ، وَأَنْتَ تَعْلَمُ فِيهِ نَحْوَهُ، فَلَا تَسُبَّهُ فَيَكُونَ أَجْرُهُ لَكَ وَوِزْرُهُ عَلَيْهِ.

সাহাবী বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নেক কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ইরশাদ করলেন, কোনো নেক কাজ তুচ্ছ মনে করো না। এমনকি যদি এক পাক দড়ি কিংবা জুতোর ফিতা কাউকে দেয়ার সুযোগ হয়। অথবা এমন যে, তোমার বালতি থেকে অপরকে পানি ঢেলে দিলে, মানুষ চলাচলের পথ থেকে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দিলে, অথবা হয়তো তোমার ভাইয়ের সাথে মিলিত হলে আনন্দিত চেহারায়। কারও সাথে হয়ত সাক্ষাৎ করলে সালাম বিনিময়ের উদ্দেশ্যে। এমনকি যমীনের বুকে দুঃখ ভারাক্রান্ত কোনো ব্যক্তিকে সান্তনা দেয়া...। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৫৯৫৫ (হাদীসটি সহীহ)

এই হাদীসে মোট সাতটি আমলের কথা বলা হয়েছে। আমলগুলো আলাদাভাবে বিশেষ কোনো নেক আমল নয়; বরং শুধু সালামের উল্লেখ ছাড়া অপরাপর আমলগুলো খুবই সাধারণ এবং যাপিত জীবনেরই অংশ। অথচ তারপরেও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবীকে সম্বোধন করে উম্মতকে সতর্ক করেছেন-

لَا تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا

কোনো নেক আমলকে মোটেই তুচ্ছ মনে করবে না।

কিন্তু আমরা কি যা নিষেধ করা হয়েছে তা-ই করছি না?

নেক কাজ। আসলে নেক কাজ করা বলতে আমরা যা বুঝি, তা আমলের প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নয়। আমরা মনে করি, নেক কাজ মানে আলাদা কিছু, যা মসজিদে করতে হবে, ওযুর সাথে করতে হবে, কিংবা এক জায়গায় বসে নীরবে পালন করতে হবে। কিন্তু ব্যাপারটি সার্বিকভাবে তা নয়। বরং ফরয বিধান ও অল্প কিছু নফল এবং তাসবীহাত আদায়ের ক্ষেত্রে এই চিত্র প্রযোজ্য। বরং একজন মুমিনের পুরো জীবনটাই হতে পারে নেক আমল। আসলে নেক আমল করা যতটুকু প্রয়োজন, তার চেয়ে প্রয়োজন আমলকে নেক করা। অর্থাৎ জীবনের প্রতিটি কাজকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণের নিমিত্তে সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযাায়ী পালন করা। বস্তুত মুমিনের প্রকৃত জীবন বৃত্তান্ত তো এই যে-

اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ.

আমার দৈহিক ইবাদাত আমার আর্থিক কর্মসম্পাদন, আমার জীবন আমার মৃত্যু- সকল কিছুই রাব্বুল আলামীন আল্লাহর জন্য নিবেদিত।

তাই তো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম নারী ও উম্মুল মুমিনীনগণকে জীবনের সাধারণ বিষয় বা সামাজিক আচরণও শিক্ষা দিয়েছেন। হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

يَا نِسَاءَ المُسْلِمَاتِ، لاَ تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا، وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ.

হে মুসলিম নারীগণ! কোনো নারী যেন তার প্রতিবেশীর ব্যাপারে কোনো কিছুকে ক্ষুদ্র মনে না করে। যদিও তা বকরীর একটি খুঁড় হয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস  ২৫৬৬

আলিমগণ এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে হাদিয়া প্রদানকারী এবং হাদিয়া গ্রহণকারী উভয়কে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে যে, হাদিয়া প্রদান একটি নেক কাজ। এখানে পরিমাণ বিবেচনা করে উভয়ের কেউ যেন এই কাজটিকে তুচ্ছ মনে না করে। আসলে খুঁড় কোনো হাদিয়া দেয়ার বিষয় নয়, এমনকি তা দেয়ার কোনো প্রচলনও ছিল না। তবুও সামান্য বোঝানোর জন্য এর দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে যে, এমন সামান্য বস্তু দিয়ে হলেও সেই নেক কাজ তুচ্ছ মনে করো না।

অপর এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-

رُدُّوا السَّائِلَ وَلَوْ بِظِلْفٍ مُحْرَقٍ.

তোমরা সুয়ালকারীকে কিছু দিয়ে দাও, যদিও তা একটি পোড়া খুঁড়ই হোক না কেন। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২৫৬৫

আসলে যে কোনো কাজকে বাহ্য দৃষ্টিতে বিবেচনা না করে তার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে। আমরা জানি না, কোন্ নেক কাজ, যা হয়তো দেখতে সামান্য, কিন্তু আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে গেলে তা জাহান্নাম থেকে নাজাতের কারণ হয়ে যাবে। এমনকি খেজুরের সামান্য অংশ দান করা- তাও হয়ে যেতে পারে নাজাতের ওসীলা। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ، فَإِنْ لَمْ تَجِدْ فَبِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ.

তোমরা খেজুরের একটি অংশ দিয়ে হলেও জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর। আর তাও যদি না পার তাহলে ভালো কথা দিয়ে...। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০২৩

‘ভালো কথা’ এর ব্যাখ্যায় অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। যেমন, ভালো কাজের পথ দেখানো, মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখা, দুই বিবাদকারীর মাঝে সন্ধি করে দেয়া, কোনো অস্পষ্ট বিষয়কে স্পষ্ট করা, কোনো ক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে সামলে নেয়া কিংবা রাগান্বিত ব্যক্তিকে শান্ত করা ইত্যাদি। এই কাজগুলো আমরা স্বাভাবিকভাবেই করে থাকি। কিন্তু তাকে নেক কাজ বিবেচনা করি না। অথচ এভাবে ছোট ছোট কাজ সচেতনতার সাথে সম্পন্ন করলে, তা হবে নেকীর কারণ। এভাবে আমাদের দুনিয়ার জীবন হবে আমাদের আখেরাতের জন্য উত্তম প্রস্তুতি। এসব কাজ যত সামান্যই মনে হোক, আখেরাতের দীর্ঘ সফরের পথে মুমিনের জন্য তা উত্তম পাথেয়। তাই তো ইরশাদ হয়েছে-

فَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَیْرًا یَّرَهٗ.

যে অণু পরিমাণও নেক আমল করবে, সে তা দেখতে পাবে। অর্থাৎ তার প্রতিদান পেয়ে যাবে।

ছোট গোনাহ

পূর্বের আয়াতের পরেই একথাও বলা হয়েছে-

وَ مَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا یَّرَهٗ.

যে অণু পরিমাণও মন্দ কাজ করবে, সেও তা দেখতে পাবে।

ছোট নেকীর ন্যায় ছোট গোনাহকেও আমরা অনেকসময় পরোয়া করি না। অথচ প্রতিটি গোনাহ এমন, যদি তা ক্ষমা ছাড়া রয়ে যায় তাহলে এই একটি গোনাহের জন্যও কিয়ামতের দিন হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। সেদিন আমার কাছে এ ব্যাপারে কৈফিয়ত তলব করা হবে। যেই মহান মালিকের পক্ষ থেকে হিসাব নেয়া হবে এবং যেই নাযুক মুহূর্তে, তখন গোনাহ কীভাবে ‘ছোট’ হয়!

তাই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এব্যাপারেও উম্মতকে সতর্ক করেছেন; নববী যবানে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। স্বয়ং উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহাকে নবীজী সম্বোধন করে বলেন-

يَا عَائِشُ، إِيَّاكِ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوبِ، فَإِنَّ لَهَا مِنَ اللهِ طَالِبًا.

প্রিয় আয়েশা! ছোট ও তুচ্ছ ধরনের গোনাহ থেকেও সতর্ক থাক। কেননা তুচ্ছ গোনাহের ব্যাপারেও আল্লাহর পক্ষ থেকে হিসাব তলবকারী থাকবে। -সুনানে দারেমী, হাদীস ২৭৬৮

আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফিরিশতা যা লিখছে, যার হিসাব সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং কিয়ামতের ভয়াবহ দিনে যেই হিসাবের নিষ্পত্তি হবে, তা তো কোনো ছোট বিষয় হতে পারে না। কিন্তু কেন যেন আমরা ঘুমিয়ে থাকি। আমাদের সঠিক উপলব্ধি জাগ্রত হয় না!

অপর এক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِيَّاكُمْ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوبِ، فَإِنَّهُنَّ يَجْتَمِعْنَ عَلَى الرَّجُلِ حَتَّى يُهْلِكْنَهُ وَإِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَرَبَ لَهُنَّ مَثَلًا: كَمَثَلِ قَوْمٍ نَزَلُوا أَرْضَ فَلَاةٍ، فَحَضَرَ صَنِيعُ الْقَوْمِ، فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَنْطَلِقُ، فَيَجِيءُ بِالْعُودِ، وَالرَّجُلُ يَجِيءُ بِالْعُودِ، حَتَّى جَمَعُوا سَوَادًا، فَأَجَّجُوا نَارًا، وَأَنْضَجُوا مَا قَذَفُوا فِيهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, ছোট গোনাহের ব্যাপারে তোমরা সাবধান হও। কেননা মানুষের ওপর তা জমা হয়ে একপর্যায়ে তাকে ধ্বংস করে ছাড়ে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃষ্টান্ত দিয়েছেন এভাবে যে, কিছু লোক এক প্রান্তরে যাত্রা বিরতি করল। খাবার প্রস্তুত করার সময় হলে প্রত্যেকে গিয়ে কিছু লাকড়ি কুড়িয়ে আনল। এভাবে কিছু কিছু করে বহু জ¦ালানী সংগ্রহ হল। তখন তা দিয়ে বড় করে আগুন জ্বালিয়ে তারা খাবার প্রস্তুত করল। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৩৮১৮

(হাদীসটি হাসান লিগাইরিহী)

এই হাদীসে দৃষ্টান্ত দিয়ে বোঝানো হয়েছে যে, ছোট ছোট ইন্ধন একত্র হয়ে বিরাট অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হতে পারে। ফলে তখন তা যে কোনো কিছু জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

আসলে নেকী ও গোনাহ উপলব্ধির জন্য শুধু দৃষ্টি যথেষ্ট নয় বরং প্রয়োজন হয় অন্তর্দৃষ্টি। কিন্তু আমাদের আখেরাত-বিমুখতা আমাদের অন্তর্দৃষ্টিকে আচ্ছন্ন করে রাখে। আর অন্তর্দৃষ্টি আচ্ছন্ন হয়ে গেলে বাহ্যদৃষ্টিও আর কল্যাণের পথ দেখায় না...। আখেরাতের পথে যারা চলেছেন; চলছেন, তাঁদের সঙ্গই পারে আমাদের সঠিক দৃষ্টি এবং অন্তর্দৃষ্টি জাগ্রত করতে। ইয়া আল্লাহ, আপনিই আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমাদের দৃষ্টির আবিলতা, অন্তরের আচ্ছন্নতা দূর করে দিন।