সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে বিএনপিকে একমত হওয়ার আহ্বান এনসিপির

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিষয়ে বিএনপি ও সমমনাদের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ষষ্ঠ দিনের বৈঠক শেষে এ আহ্বান জানান এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, "সংবিধানিক পদে নিয়োগ জনগণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা। এই প্রক্রিয়াকে দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে রেখে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করতে হলে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। একক কর্তৃত্ব নয়, বরং সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।"
আখতার হোসেন আরও বলেন, কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি)’ বাদ দিয়ে নতুন একটি নিয়োগ কমিটি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, "নাম পরিবর্তনে আমাদের আপত্তি নেই। তবে এ কমিটি যেন নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), মহা হিসাব নিরীক্ষক কার্যালয়সহ সংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগের দায়িত্ব পালন করতে পারে—এটাই আমাদের চাওয়া।"
এনসিসির বিকল্প কমিটির বিষয়ে এনসিপি প্রস্তাব করেছে, নিয়োগ কমিটির সাত সদস্যের মধ্যে অন্তত পাঁচজনের ঐকমত্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে এবং এ কমিটিতে একজন বিরোধী দলের প্রতিনিধি রাখা বাধ্যতামূলক হবে। এতে সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার পরিবেশ তৈরি হবে বলে তারা মনে করে।
রাষ্ট্রের মূলনীতি সংক্রান্ত আলোচনায় আখতার হোসেন বলেন, "কমিশনের প্রস্তাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাহাত্তরের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত মুজিববাদী দলীয় মূলনীতিগুলোর সঙ্গে এগুলোর সামঞ্জস্য নেই। তাই আমরা প্রস্তাব রেখেছি, নতুন প্রস্তাবিত মূলনীতিগুলোকে গ্রহণ করে পুরাতন দলীয় ধারা বাদ দিতে হবে।"
তিনি সতর্ক করে বলেন, "যদি জনগণের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক কাঠামো উপস্থাপন করা না যায়, তাহলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হবে এবং ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"