ফিফার বিরুদ্ধে ফুটবলারদের জয়, মিলল ছুটির নিশ্চয়তা

টানা খেলার ধকল কমাতে ম্যাচের মাঝে ৭২ ঘণ্টা বিরতি ও মৌসুম শেষে তিন সপ্তাহ ছুটি দিচ্ছে ফিফা।
টানা ম্যাচ খেলে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত ফুটবলারদের জন্য সুখবর এসেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা থেকে। এখন থেকে দুইটি ম্যাচের মধ্যে অন্তত ৭২ ঘণ্টার বিরতি এবং দুই মৌসুমের মাঝে কমপক্ষে তিন সপ্তাহের বাধ্যতামূলক ছুটি পাবেন খেলোয়াড়েরা। ফুটবলারদের ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ফিফা।
গতকাল শনিবার নিউইয়র্কে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে ফুটবলারদের বৈশ্বিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে এই সমঝোতা হয়। পরে এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ ছাড়া ফিফা কাউন্সিলের ভবিষ্যতের বৈঠকগুলোতেও ফুটবলারদের প্রতিনিধি সংগঠনকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখবে সংস্থাটি।
সারা বছর ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের ব্যস্ত সূচির কারণে খেলোয়াড়েরা কার্যত কোনো ছুটিই পান না। ক্লাব মৌসুম শেষ হয় মে–জুনে, আবার জুলাই থেকেই নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ, বিশ্বকাপ, মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট এবং এবার যুক্ত হয়েছে সম্প্রসারিত ক্লাব বিশ্বকাপ। ফলে ফুটবলারদের ছুটির সময় নেমে এসেছে প্রায় শূন্যে।
টানা খেলার কারণে ফুটবলারদের চোটের আশঙ্কা বাড়ছে, যা নিয়ে ক্লাবগুলোও উদ্বিগ্ন। এরই প্রেক্ষাপটে ফুটবলারদের পেশাগত ঝুঁকি এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় রেখে আলোচনায় বসে ফিফা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
বৈঠকের পর ফিফার দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচগুলোর মধ্যে অন্তত ৭২ ঘণ্টা বিরতি এবং মৌসুম শেষে ২১ দিনের বিশ্রাম সময় বাধ্যতামূলক থাকবে। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি দিন পূর্ণ বিশ্রাম দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বছর জুনে ফুটবলারদের বৈশ্বিক সংগঠন ফিফপ্রো ও ইউরোপের দুটি বড় ইউনিয়ন—ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সংগঠন—ফিফার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। অভিযোগ ছিল, বিশ্বকাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ সম্প্রসারণ করে ফিফা সূচি অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে, যা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘন করে।
ফিফপ্রোর দাবি ছিল, প্রতি মৌসুম শেষে বাধ্যতামূলক চার সপ্তাহের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। যদিও এখন আপাতত তিন সপ্তাহ ও ম্যাচের মধ্যে ৭২ ঘণ্টা বিরতির ব্যাপারে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ। খেলোয়াড়দের স্বার্থ রক্ষায় এটিকে বড় জয় হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকেরা।