বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ১৮ ১৪৩২, ০৬ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

হজ্জ করা

 প্রকাশিত: ১৯:০২, ২৬ নভেম্বর ২০২০

হজ্জ করা

উৎস:
ইসলাহী নেসাব: হায়াতুল মুসলিমীন
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

যাদের মধ্যে হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তসমূহ পাওয়া যাবে তাদের জন্য হজ্জ করা ফরয। অন্যদের জন্য নফল। নামায, যাকাত ও রোযার মত হজ্জও ইসলামের একটি রুকন, অর্থাৎ,

অত্যন্ত মহিমান্বিত ও অত্যাবশ্যকীয় একটি নির্দেশ।

১. আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
‘আর এ ঘরের হজ্জ করা হলো, মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য, যে লোকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত পৌঁছার।’ (সূরা আলে ইমরান৯৭)

২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘চারটি জিনিস আল্লাহ তাআলা ইসলামের মধ্যে ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি সেই চারটির তিনটিও আদায় করবে, তাতেও তার কাজ হবে না, যতক্ষণ না চারটির সব কয়টি আদায় করে। নামায, যাকাত, রোযা ও হজ্জ।

এ হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, যদি নামায, যাকাত ও রোযা সবই করে, কিন্ত্ত ফরয হজ্জ আদায় না করে, তাহলে তার নাজাতের জন্য তা যথেষ্ট নয়। হজ্জের মধ্যে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা অন্যান্য ইবাদতের মধ্যে নেই। তা এই যে, অন্যান্য ইবাদতের কর্মকান্ডসমূহ কিছুটা হলেও যৌক্তিক এবং কিছু বাহ্যিক উপকারিতাও সেগুলোতে রয়েছে। কিনত্ত হজ্জের কর্মকান্ডসমূহে আল্লাহপ্রেমের অপূর্ব মহিমা বিদ্যমান। বিধায় হজ্জ সে ব্যক্তিই করবে, যার আল্লাহপ্রেম যুক্তি-বুদ্ধির উপর প্রবল হবে। হজ্জ করার পূর্বে এই প্রেমের মধ্যে কিছুটা কমতি থাকলেও অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, প্রেমিকসুলভ কাজ করার দ্বারা প্রেম জন্ম নেয়। তাই হজ্জ করার দ্বারা এ ঘাটতি পূর্ণ হয়ে যাবে। বিশেষভাবে যদি এ কাজগুলো এ নিয়তেই করা হয়, তাহলে তো আর কথাই নেই। আর যে ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহর প্রেম বিদ্যমান, সে দ্বীনের ব্যাপারে মজবুত হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিধায় হজ্জ করার মধ্যে যে ধর্মীয় দৃঢ়তার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, তা প্রমাণিত হলো। (একইরুপ বিষয়বস্ত্ত রোযার আলোচনাতেও চলে গেছে) সামনের হাদীসসমূহ দ্বারা এ কথাই সুস্পষ্ট হয়।

৩. হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘বাইতুল্লাহর চতুর্দিকে ‘তাওয়াফ’ করা, সাফা-মারওয়ার মধ্যে ‘সায়ী’ করা এবং কঙ্কর নিক্ষেপ করা এ সবই আল্লাহর স্মরণকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’
(আবু দাউদ)
ফায়দা: যদিও বাহ্য দৃষ্টিসম্পন্ন লোকদের বিস্ময় জাগতে পারে যে, এই প্রদক্ষিণ করা, দৌড়াদৌড়ি করা ও কঙ্কর নিক্ষেপ করার মধ্যে কি যৌক্তিকতা রয়েছে? তোমরা এর যৌক্তিকতার সন্ধান করো না। এতটুকু বোঝো যে, এগুলো আল্লাহ তাআলার নির্দেশ। এগুলো করার দ্বারা তাঁর কথা স্মরণ হয়। তার সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। প্রেমের পরীক্ষা হয়। কারণ, যা যুক্তি-বুদ্ধিতে আসেনি তাও তার হুকুম মনে করে মেনে নিয়েছে। তাছাড়া প্রেমাস্পদের গৃহের মোড়ে মোড়ে আত্মনিবেদন করা, তার অলিতে-গলিতে দৌড়াদৌড়ি করা সুস্পষ্টই প্রেমিকসুলভ আচরণ।

৪. হযরত যায়েদ বিন আসলাম (রাযিঃ) স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন- ‘আমি হযরত উমর (রাযিঃ) থেকে শুনেছি, তিনি ইরশাদ করেন- (এখন তাওয়াফের মধ্যে) কাঁধ ঝুলিয়ে দৌড়ানো এবং কাঁধকে চাদরের বাইরে বের করার কি কারণ রয়েছে? অথচ আল্লাহ তাআলা ইসলামকে (মক্কাভূমিতে) শক্তিশালী করেছেন এবং কুফুরী ও কাফিরদেরকে নিশ্চিহ্ন করেছেন (এবং এ কাজগুলো আরম্ভই হয়েছিলো, তাদেরকে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য, যেমন কিনা বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে)। এতদসত্ত্বেও (অর্থাৎ, বর্তমানে সেই উদ্দেশ্য না থাকলেও) আমরা সে কাজ ছাড়বোনা, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় আমরা (তাঁর অনুসরণ ও নির্দেশ পালনার্থে) করতাম। (কারণ, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজ্জে এর উপর আমল করেছেন। যখন কিনা মক্কায় একজন কাফেরও ছিলো না।)’ (আবু দাউদ)

ফায়দা: হজ্জের মধ্যে যদি প্রেমের রং প্রবল না হতো, তাহলে যখন এর যৌক্তিক প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়েছিলো, তখন এ কাজও মওকুফ করে দেওয়া হতো।

৫. হযরত আবিদ বিন রবীয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে-
‘হযরত উমর (রাযিঃ) হজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) এর নিকট এলেন এবং তাকে চুম্বন করলেন এবং বললেন-আমি জানি, তুমি পাথর। না (কারো) উপকার করতে না পারো, না ক্ষতি করতে পারো। আমি যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তোমাকে চুম্বন করতে না দেখতাম তাহলে আমি (কখনোই) তোমাকে চুম্বন করতাম না।’
(আবু দাউদ)

ফায়দা: প্রেমাস্পদের এলাকার কোন বস্ত্তকে চুম্বন করার পিছনে প্রেম ছাড়া আর কি যৌক্তিকতা থাকতে পারে। হযরত উমর (রাযিঃ) তার এ কথার দ্বারা এ বিষয় পরিষ্কার করে দিলেন যে, মুসলমানগণ হজরে আসওয়াদকে মা’বুদ বা উপাস্য মনে করে না। কারণ, মা’বুদ তো সেই হয়, যে লাভ-লোকসানের মালিক হয়।

৬. হযরত ইবনু উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে-
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করলেন। তারপর তার উপর স্বীয় (পবিত্র) ওষ্ঠদ্বয় এমতাবস্থায় রাখলেন যে, দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত তিনি কাঁদতে থাকলেন, তারপর দৃষ্টি ফিরিয়েই দেখেন যে, হযরত উমর (রাযিঃ)ও কাঁদছেন। তিনি ইরশাদ করলেন-হে উমর! এ জায়গায় অশ্রু প্রবাহিত করা হয়।
(ইবনু মাজা, ইবনু খুযাইমা, হাকিম, বাইহাকী)

ফায়দা: প্রেমাস্পদের চিহ্নকে সোহাগ করার সময় কাঁদা কেবলমাত্র প্রেমের কারণেই হতে পারে। ভীতি প্রভৃতির কারণে হতে পারে না। প্রেমিকসুলভ অন্যা্ন্য কর্ম তো ইচ্ছা করেও হতে পারে। কিন্ত্ত কাঁদা আবেগ ভিন্ন হতে পারে না। বিধায় হজ্জের সম্পর্ক যে প্রেমের সঙ্গে এ বিষয়টি এ হাদীস দ্বারা আরও অধিক প্রমাণিত হলো।

৭. হযরত জাবের (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া সাল্লাম (দীর্ঘ একটি হাদীসে) ইরশাদ করেন-
‘যখন আরাফার দিন হয় (যেদিন হজ্জকারীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করে) তখন আল্লাহ তাআলা এদের নিয়ে গর্ব করে ইরশাদ করেন- আমার বান্দাদের দিকে দেখো। তারা দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে এমতাবস্থায় আমার নিকট এসেছে যে, তাদের চুল আলু-থালু এবং দেহ ধূলোমলিন এবং রোদের মধ্য দিয়ে চলছে। আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রাখছি যে, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম।’ (বাইহাকী, ইবনু খুযাইমা)

ফায়দা: এ বেশ যে, প্রেমিকসুলভ তা সুস্পষ্ট। আর আল্লাহ তাআলার গর্ব সহকারে একথা উল্লেখ করা এই পাগলপারা বেশ তার নিকট প্রিয় হওয়ার বিষয় ব্যক্ত করে। হজ্জের মধ্যে প্রেমিকসুলভ মহিমান্বিত আচরণ থাকার স্বপক্ষে নমুনাস্বরুপ এ কয়টি হাদীস লেখা হলো। অন্যথায় হজ্জের সমস্ত কর্মকান্ড সুস্পষ্টরুপে প্রেমিকসুলভ। অর্থাৎ, মুযদালিফা ও আরাফার পাহাড় সারির মধ্যে চলাফেরা করা। লাব্বাইক বলে সরবে চিৎকার করা। খালি মাথায় চলাফেরা করা। নিজের জীবনকে মৃতের রুপ বানানো। অর্থাৎ, মৃতদের পোশাক পরিধান করা, নখ ও চুল পর্যন্ত না কাটা, উকুন পর্যন্ত না মারা, যার দ্বারা পাগলের ন্যায় বেশ ধারণ করা হয়। মাথা নেড়ে না করা, কোন পশু শিকার না করা। নির্দিষ্ট পরিধির বৃক্ষ না কাটা, ঘাস পর্যন্ত না ছেঁড়া, যার মধ্যে প্রেমাস্পদের এলাকার আদব রক্ষা করা রয়েছে, এ সমস্ত কাজ বুদ্ধিমানের না প্রেমিকের? (এগুলোর কিছু কিছু বিষয় মহিলাদের না থাকার পিছনে বিশেষ কারণ রয়েছে। অর্থাৎ, পর্দা পালনার্থে এর কিছু কিছু কাজ তাদের জন্য নেই।) কাবাঘরের চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করা, সাফা ও মারওয়ার মাঝে দৌড়ানো, নির্দিষ্ট লক্ষকে উদ্দেশ্য করে কঙ্কর মারা, হজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা, কান্নাকাটি করা এবং ধূলোমলিন বেশে রৌদ্রে পুড়ে আরাফার ময়দানে হাজির হওয়া ইত্যাদি কর্মকান্ডসমূহ প্রেমিকসুলভ হওয়ার বিষয় উপরের হাদীসসমূহে তা উল্লেখ রয়েছে। যেভাবে হজ্জের মধ্যে প্রেম ও ভালোবাসার রং রয়েছে। যে জায়গায় এ কাজগুলো আদায় করা হয় অর্থাৎ, পবিত্র মক্কা ও তৎসংলগ্ন জায়গাসমূহ, তার মধ্যেও প্রেমের মহিমান্বিত রুপ রাখা হয়েছে। যার ফলে হজ্জের সেই প্রেমের রং আরো তীব্র হয়। সুতরাং আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর দু’আ সম্পর্কে ইরশাদ করেন- ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমি নিজের এক সন্তানকে তোমার পবিত্র গৃহের সন্নিকটে বৃক্ষলতাহীন উপত্যকায় আবাদ করেছি… আপনি কিছু লোকের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করুন।’ (ইবরাহীম ৩৭)

ফায়দা: এ দু’আর প্রভাব সুস্পষ্ট দৃষ্টিগোচর হয়, যা ইবনু আবি হাতিম সুদ্দী থেকে বর্ণনা করেছেন।

৯. কোন মুমিন এমন নেই, যার অন্তর কা’বার ভালোবাসায় আটকা নয়।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন যে, যদি হযরত ইবরাহীম (আঃ) ‘মানুষদের অন্তর’ বলতেন, তাহলে সেখানে ইহুদী ও খৃষ্টানদের ভীড় জমতো। কিন্ত্ত তিনি ঈমানদারদেরকে নির্দিষ্ট করে ‘কিছু লোকের অন্তর’ বলেছেন। (দুররে মনসুর)

হাদীস শরীফে এসেছে-

১০. হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হিজরতের সময় পবিত্র মক্কাকে সম্বোধন করে) ইরশাদ করেন-
‘তুমি কত পবিত্র নগরী এবং আমার কত প্রিয়! আমার স্বজাতি যদি আমাকে তোমার থেকে বের করে না দিতো, তাহলে আমি অন্য জায়গায় গিয়ে থাকতাম না।’
(মেশকাত, তিরমিযী শরীফের উদ্ধৃতিতে)

ফায়দা: প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ভালোবাসা রয়েছে, তাই তার প্রিয় নগরী পবিত্র মক্কার সঙ্গেও তাদের অবশ্যই ভালোবাসা থাকবে। তাহলে মক্কার সঙ্গে ভালবাসা হওয়ার পিছনে দু’জন নবীর দু’আর প্রভাব রইলো। এ তো ছিলো হজ্জের ও হজ্জের স্থানের ধর্মীয় মর্যাদা। যা প্রকৃত মর্যাদা। তাছাড়া পার্থিব কিছু উপকারিতাও আল্লাহ তাআলা এতে রেখেছেন। যদিও হজ্জের মধ্যে এ সবের নিয়ত থাকা উচিত নয়। কিন্ত্ত তা আপনা আপনি লাভ হয়ে থাকে। সম্মুখের আয়াতদ্বয়ে এদিকে ইঙ্গিত রয়েছে।
‘আল্লাহ সম্মানিত গৃহ কা’বাকে মানুষের (উপকারিতার) স্থিতিশীলতার কারণ করেছেন।’
(সূরা মায়িদা-৯৭)

ফায়দা: ‘উপকারিতা’ ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। কা’বার ধর্মীয় উপকারিতা তো সুস্পষ্ট। আর পার্থিব উপকারিতার কিছু এই –এটি নিরাপদ জায়গা। এখানে প্রতিবছর মানব সমাবেশ হয়। এতে করে অর্থনৈতিক উন্নতি ও জাতীয় ঐক্য অতি সহজে লাভ হয়। কা’বা যতদিন টিকে থাকবে এ পৃথিবী ততদিন টিকে থাকবে। এমনকি কাফিররা যখন একে বিধ্বস্ত করবে তার পরপরই কিয়ামত হবে। বহু হাদীস দ্বারা একথা জানা যায়। (বয়ানুল কুরআন)

১২. আল্লাহ তাআলা হজ্জ করার উপকারিতা সম্পর্কে মানুষদেরকে বলেন-‘নিজেদেরই দুনিয়া ও আখিরাতের বহু উপকার লাভের জন্য এখানে এসে উপস্থিত হোক।’

আখিরাতের লাভ এই যে, -এখানে হজ্জ করবে, সওয়াব লাভ করবে এবং আল্লাহর সন্ত্তষ্টি লাভ করবে। আর দুনিয়ার লাভ এই যে, কুরবানীর গোশত খাবে, ব্যবসায় উন্নতি হবে ইত্যাদি।
হযরত ইবনে আবি হাতেম উপরোক্ত বিষয়টি হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

উমরাহ:

হজ্জের মত আরেকটি ইবাদত রয়েছে, উমরাহ। উমরাহ সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। এর মূল বিষয় হজ্জেরই কিছু প্রেমিকসুলভ কর্মকান্ড। এ কারণেই এর উপাধি ‘হজ্জে আসগর’ তথা ছোট হজ্জ।

হযরত আবদুল্লাহ বিন শাদ্দাদ এবং হযরত মুজাহিদ (রাযিঃ) থেকে এ বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে। (দুররে মানসুর)
তবে এটি হজ্জের সময়ও আদায় হয়। ফলে এ সময় একই ধাঁচের দু’টি ইবাদতের সমন্বয় ঘটে। আবার অন্য সময়ও আদায় হয়।

১৩. এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
‘(যখন তোমরা হজ্জ বা উমরা পালন করবে, তখন) হজ্জ এবং উমরাকে আল্লাহ তাআলার (সন্ত্তষ্টির) জন্য পরিপূর্ণরুপে আদায় করবে।’ অর্থাৎ, খাঁটি নিয়তে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাবসমূহ যথাযথভাবে পালন করবে। (সূরা বাকারা)

১৪. হযরত আবু উমামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘যে ব্যক্তির কোন বাহ্যিক অপারগতা, কিংবা অত্যাচারী শাসক, কিংবা আটকে দেওয়ার মতো ব্যাধি হজ্জ থেকে বাধাদানকারী না থাকে এবং এরপরও সে হজ্জ না করে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে তার ইচ্ছা চাই ইহুদী হয়ে মরুক চাই খৃষ্টান হয়ে মরুক।’
(মেশকাত, দারামীর উদ্ধৃতিতে)

ফায়দা: ফরয হজ্জ আদায় না করার বিষয়ে কত মারাত্মক ধমকি এসেছে।

১৫. হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘যে ব্যক্তি হজ্জের ইচ্ছা করলো, তার উচিত জলদি হজ্জ করা।’
(মিশকাত, আবু দাউদ, তিরমিযী)
১৬. হযরত ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘হজ্জ ও উমরাহকে একত্রে আদায় করো। (যদি হজ্জের সময় হয়) এ দু’টি দরিদ্রতা ও পাপসমূহকে বিদূরিত করে। যেমন, হাঁপড় লোহা ও স্বর্ণ-চাঁদির ময়লা বিদূরিত করে। (তবে শর্ত হলো, অন্য কোন জিনিস এর বিপরীত প্রভাব সৃষ্টিকারী না থাকতে হবে।) এবং সতর্কতার সঙ্গে যেই হজ্জ করা হবে তার বিনিময় জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়।’
(মিশকাত, তিরমিযী, নাসায়ী)
ফায়দা: এ হাদীসে হজ্জ ও উমরার ধর্মীয় উপকারিতা উল্লেখিত হয়েছে। এবং সাথে সাথে একটি ইহলৌকিক উপকারিতার কথাও উল্লেখিত হয়েছে। হাদীসে উল্লেখিত ‘গুনাহ’ দ্বারা আল্লাহর হক উদ্দেশ্য। কারণ, বান্দার হক তে শহীদ হলেও মাফ হয় না। (কারণ, হাদীসের মধ্যে এসেছে অর্থাৎ, ঋণ ছাড়া। মেশকাত শরীফে মুসলিম শরীফের উদ্ধৃতিতে এটি বর্ণিত হয়েছে।)

১৭. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘হজ্জ ও উমরাকীগণ আল্লাহর মেহমান, তারা যদি আল্লাহর নিকট দু’আ করে, আল্লাহ তাদের দু’আ কবুল করেন। আর যদি গুনাহ মাফ চায় তাহলে মাফ করে দেন।’

১৮. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘যে ব্যক্তি হজ্জ বা উমরাহ বা জিহাদ করতে রওয়ানা হলো, তারপর সে পথেই (এ সমস্ত কাজ করার পূর্বে) মৃত্যুবরণ করলো, আল্লাহ তাআলা তার জন্য গাজী, হাজী ও উমরাহকারীর সওয়াব লিখবেন।’ (মিশকাত, বাইহাকী)

রওযা পাকের যিয়ারত:

হজ্জের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৃতীয় আরেকটি আমল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র রওযা যিয়ারত করা। অধিকাংশ আলেমের মতে এটি মুস্তাহাব। হজ্জের মধ্যে যেমন আল্লাহ প্রেমের মহিমান্বিত রুপ রয়েছে, রওযা শরীফ যিয়ারতের মধ্যে রয়েছে নবীপ্রেমের মহিমান্বিত রুপ। হজ্জের দ্বারা যেমন আল্লাহর প্রেমের উন্নতি ঘটে, যিয়ারতের দ্বারা নবীপ্রেমের ‍উন্নতি ঘটে। যার অন্তরে আল্লাহ ও রাসূলের প্রেম থাকবে সে দ্বীনের ব্যাপারে কতই না মজবুত হবে। নিম্নের হাদীস দ্বারা প্রেমের এ মহিমান্বিত রুপ ফুটে উঠে।

১৯. হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘যে ব্যক্তি হজ্জ করলো এবং আমার মৃত্যুর পর আমার কবর যিয়ারত করলো, সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সঙ্গে সাক্ষাত করলো।’ (মিশকাত, বাইহাকী)

ফায়দা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উভয় যিয়ারত (সাক্ষাত)কে সমান আখ্যা দিয়েছেন। বিশেষ কোন দিককে যেহেতু নির্দিষ্ট করা হয়নি, তাই সবধরনের প্রভাবের ক্ষেত্রে সমান হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় তার সাক্ষাত করলে তার কি পরিমাণ প্রেম অন্তরে জন্মাতো তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে তার ইন্তেকালের পর যিয়ারত করার প্রভাবও তেমনই হবে। হাদীসটি তো এ দাবীকে শক্তিশালী করার জন্য লেখা হয়েছে। অন্যথায় যিয়ারতের এ প্রভাব অর্থাৎ, নবীপ্রেমের উন্নতি সুস্পষ্ট দৃষ্টিগোচর হয়। হজ্জের জায়গার মধ্যে অর্থাৎ, পবিত্র মক্কার মধ্যে যেভাবে প্রেমের মহিমান্বিত রুপ রাখা হয়েছে। যার বিবরণ উপরে উল্লেখিত হয়েছে। একইভাবে যিয়ারতের জায়গা- পবিত্র মদীনার মধ্যেও ভালোবাসার মহিমান্বিত রুপ ও উপকরণ রাখা হয়েছে। যেমন নিম্নের হাদীসে এসেছে।

২০. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে (দীর্ঘ একটি হাদীসে) বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘হে আল্লাহ! তিনি (অর্থাৎ, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম) আপনার নিকট মক্কার জন্য দু’আ করেছেন, আর আমি আপনার নিকট মদীনার জন্য দু’আ করছি। ঐ দু’আ এবং আরো ওর সমপরিমাণ’ অর্থাৎ, দ্বিগুণ। (মিশকাত, মুসলিম)

ফায়দা; হযরত ইবরাহীম (আঃ) পবিত্র মক্কার জন্য প্রিয়ভাজন হওয়ার দু’আ করেছেন। বিধায় পবিত্র মদীনার জন্য দ্বিগুণ প্রিয়ভাজন হওয়ার দু’আ হলো।

২১. হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে (দীর্ঘ একটি হাদীসে) বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘হে আল্লাহ! মদীনাকে আমাদের ভালোবাসার বস্ত্ত বানিয়ে দিন। যেমন আমরা মক্কাকে ভালোবাসে থাকি। বরং এর চেয়েও অধিক।’ (মিশকাত, বুখারী)

২২. হযরত আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করতেন এবং মদীনার প্রাচীরসমূহ দেখতে পেতেন, তখন মদীনার ভালোবাসায় বাহনকে দ্রুত চালাতেন। (মিশকাত, বুখারী)

ফায়দা: প্রিয়জনের প্রিয়জনও প্রিয়জন হয়ে থাকে। বিধায় সমস্ত মুসলমানের নিকট পবিত্র মদীনা অবশ্যই প্রিয় হবে।

২৩. হযরত ইয়াহইয়া বিন সা’য়ীদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘পৃথিবীর বুকে এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে আমার কবর হওয়া আমার নিকট মদীনার থেকে অধিক পছন্দ। এ কথাটি তিনি তিনবার ইরশাদ করেছেন।’
(মিশকাত, মুয়াত্তায়ে মালিক)
এর পূর্বের হাদীসে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে এখানেও একই ব্যাখ্যা প্রযোজ্য।

হজ্জ ও যিয়ারতের দ্বারা ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়া এবং প্রত্যেক ঈমানদারের অন্তরে হজ্জ ও যিয়ারতের জায়গাসমূহের ভালোবাসা থাকার বিষয়টি প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। এ ভালোবাসার যে প্রভাব ধর্মের উপর পড়ে, তার বিবরণ উপরে উল্লেখিত হয়েছে। অতএব হে সামর্থ্যবান মুসলমানগণ! এ মহান সম্পদকে হাতছাড়া করো না।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল