সংসদে প্রতিনিধিত্ব চান ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ শহীদদের পরিবার

শহীদ পরিবারের দাবি, সংসদে চাই নিজেদের প্রতিনিধি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ ও বিদ্যমান নিম্নকক্ষে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ২০২৪ সালের ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে’ শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪, জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তাঁরা এই দাবি জানান।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যিনি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যুক্ত হন। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আলোচনার শুরুতেই ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ এবং আগের সরকার আমলে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। শহীদ ইয়ামিনের বাবা মহিউদ্দিন বলেন, “শান্তির স্বার্থে সংসদের উচ্চকক্ষ যেন অনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে হয় এবং শহীদ পরিবার থেকে অন্তত ১০ জনকে সংসদের দুই কক্ষে মনোনয়ন দেওয়া হোক।”
শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী বলেন, “আবু সাঈদ গুলির সামনে বুক পেতে সবাইকে সাহস দিয়েছেন, সেই আত্মত্যাগ যেন যথাযথ স্বীকৃতি পায়।”
আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমাতুজ জোহরা অভিযোগ করে বলেন, “যাঁদের রক্তের বিনিময়ে এই পরিবর্তন, তাঁদের খবর এখন কেউ রাখে না। শহীদ পরিবারগুলো অবহেলিত।”
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদী বলেন, “২০১২ সালে গুম হওয়ার পর আজও তাঁর কোনো খোঁজ নেই। গুম কমিশন বারবার ফোন করে জানতে চায়, তিনি ফিরে এসেছেন কি না! এর থেকে বোঝা যায় তারা কতটা আন্তরিক।”
গুম হওয়া ব্যক্তিদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ, তাঁদের বিচার করতে হবে। শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত লড়াই চলবে।”
পারভেজ হোসেনের মেয়ে আবিদা ইসলাম বলেন, “১২ বছর ধরে বাবাকে খুঁজছি। এখনো ফিরে আসার আশায় আছি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও বক্তব্য দেন ছাত্রদল নেতা শহীদ ওয়াসিমের বাবা শফিউল আলম, গুম হওয়া নুরুজ্জামান জনির ভাই মনিরুজ্জামান এবং বিশ্বজিৎ দাসের বাবা অনন্ত চন্দ্র দাস প্রমুখ।