মণিপুরে কুকি বিদ্রোহীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে গুলিতে নিহত ৪

মণিপুরে কুকি বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত ৪
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় কুকি জনগোষ্ঠীর চারজন নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা, কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
মঙ্গলবার মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তিনজন পুরুষের মরদেহ একটি গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া একজন নারীর মরদেহ কাছাকাছি একটি স্থানে পাওয়া গেছে।
নিহত তিন পুরুষ হলেন—মাতেজাং এলাকার কুকি ন্যাশনাল আর্মির (KNA) উপপ্রধান থেনখোথাং হাওকিপ (৪৮), তেসেং গ্রামের সেইখোগিন (৩৫) এবং চেংকোন এলাকার লেঙ্গোহাও (৩৫)। কুকি ন্যাশনাল আর্মি কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (KNO) একটি সশস্ত্র সংগঠন, যা ২০০৭-০৮ সালে ভারত সরকার ও মণিপুর সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতিতে চুক্তি করে। তবে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন ইউনাইটেড কুকি ন্যাশনাল আর্মি (UKNA) এই চুক্তির বাইরে ছিল।
ইউ-কেএনএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বহু সদস্যকে হত্যার জন্য থেনখোথাং হাওকিপ দায়ী। তাই প্রতিশোধ হিসেবে তাঁকে ও তাঁর সহযোগীদের হত্যা করা হয়েছে।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে হাওকিপ ও তাঁর সহযোগীরা একটি হুন্দাই গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। মংজ্যাং নামের একটি গ্রামে পৌঁছালে তাঁদের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। ওই সময়ই ঘটনাস্থলের কাছাকাছি দিয়ে যাওয়া ফলহিং নামের ৭২ বছর বয়সী এক নারীও গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। তিনি কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে পুলিশ জানায়।
মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায় মেইতেই ও কুকি-জো জনগোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা চলছে। গত দুই বছরে এই রাজ্যে সহিংসতায় অন্তত ২৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং গৃহহীন হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ।
সাম্প্রতিক ঘটনার পর পরিস্থিতি যাতে আর না উত্তপ্ত হয়, সে জন্য চূড়াচাঁদপুরসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরুর আশঙ্কা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।