ইশরাক নামাজ : ঘুমের কাছে বিসর্জিত আমল

ফজরের নামাজের পর মসজিদে বসে ইশরাকের সময় পর্যন্ত তাসবিহে লিপ্ত থাকা এবং দু রাকাত বা চার রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিস শরিফে এসেছে :
عن أنس - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ ، وَعُمْرَةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে, এর পর বসে থেকেই সূর্য না ওঠা পর্যন্ত জিকির-আসকারে নিমগ্ন থাকে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সে একটি হজ ও একটি ওমরাহর সওয়াব লাভ করবে। পরিপূর্ণ! পরিপূর্ণ! পরিপূর্ণ! অর্থাৎ একটি হজ একটি ওমরাহর পরিপূর্ণ সওয়াব লাভ করবে (তিরমিজি,হা.-৫৮৬)।
عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " مَنْ قَعَدَ فِي مُصَلَّاهُ حِينَ يَنْصَرِفُ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى يُسَبِّحَ رَكْعَتَيِ الضُّحَى لَا يَقُولُ إِلَّا خَيْرًا، غُفِرَ لَهُ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ أَكْثَرَ مِنْ زَبَدِ الْبَحْرِ
সাহল বিন মুআজ স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন : রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর ঘরে ফেরার মুহূর্তে মসজিদে স্বীয় নামাজের স্থানে দুই রাকাত নামাজ পড়া অবধি বসে থাকে এবং সেই সময়ের মধ্যে কল্যানকর ব্যতীত কোনো কথা না বলে তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনার চেয়ে অধিক হয়।’ (সুনানু আবু দাউদ, হা. - ৪৯০৭, আস সুনানুল কুবরা, ৩/৪৯)
وعن أبي أمامة - رضي الله عنه – (رفعه: (من صلى الفجر في جماعة ثم ذكر الله تعالى حتى تطلع الشمس لم يمس جلده النار أبدا
আবু উমামা রা.থেকে বর্ণিত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করল এবং বসে বসে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকির করল, অতঃপর দুই রাকাত বা চার রাকাত নামাজ আদায় করল, জাহান্নামের আগুন তাকে স্পর্শ করবে না (বাশারাতুল মাহবুব, ১১৬-১১৭, ইমাম ইবনু আবিদদুনিয়ার বরাতে)
এতো ফজিলতপূর্ণ আমলটি সাধারণত আমাদের সকালবেলার ঘুমের কাছে বলি হয়ে যায়। অথচ ইশরাকের সময় পর্যন্ত জেগে থাকতে খুব বেশী আমল করতে হয় না। সাধারণ তিলাওয়াতকারী এক পারা পড়তেই ইশরাক হয়ে যাওয়ার কথা। বা সুরা ইয়াসিন পড়ে ছয় তাসবিহ আদায় করতে থাকলেও ইশরাকের সময় হয়ে যায়। এতো সহজ একটি আমলে এতো সাওয়াব আল্লাহ রেখে দিয়েছেন। আমাদের গাফলতের ঘুম আমাদের নিয়ত কতকিছু থেকে বঞ্চিত করছে। আল্লাহ সবাইকে আমলের তাওফিক দান করুন।
পুনশ্চ : এই নামাজের জন্য সাধারণ নফলের নিয়ত করলেই হবে। আলাদা কোনো নিয়ত নেই।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল