আইএমএফের ঋণ: একসঙ্গে মিলতে পারে ১৩০ কোটি ডলার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কার্যালয়
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের আগামী ২৩ জুনের বৈঠকে বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উঠছে। আইএমএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বৈঠকের সূচি অনুযায়ী, পর্ষদের অনুমোদন পেলে বাংলাদেশ একসঙ্গে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ওইদিন বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। পর্যালোচনার ভিত্তিতে যদি সব কিছু ঠিক থাকে, তাহলে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় করা হবে।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে তিন বছর ছয় মাস মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা অনুমোদন করে আইএমএফ। এর মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ECF) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (EFF) থেকে ৩৩০ কোটি এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (RSF) থেকে ১৪০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তিনটি কিস্তিতে মোট ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে: প্রথম কিস্তি: ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, দ্বিতীয় কিস্তি: ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার, তৃতীয় কিস্তি: ১১৫ কোটি ডলার এবং এখনও বাকি রয়েছে ২৩৯ কোটি ডলার।
মূলত চলতি হিসাবের ঘাটতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের সঙ্গে এই ঋণ প্রক্রিয়া শুরু করে। তবে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেই পাওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত শর্ত—বিশেষ করে বিনিময় হার বাজারচালিত করার বিষয়ে অগ্রগতি না থাকায় তা বিলম্বিত হয়।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের প্রক্রিয়া চলবে। এরপর আইএমএফের প্রতিনিধি দল এপ্রিল মাসে ঢাকা সফরে এলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং ১২ মে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফের মধ্যে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়। এর আওতায় বাংলাদেশে দেশীয় মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারনির্ভর করা হয়।
১৪ মে আইএমএফ এক বিবৃতিতে জানায়, ঋণ ছাড়ের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং এটি পর্ষদ সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত ৭৬ কোটি ডলার ঋণের অনুরোধের কথাও প্রকাশ করে আইএমএফ। এই বাড়তি অর্থ অনুমোদিত হলে বাংলাদেশের মোট ঋণ সহায়তা দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলার।
বিবৃতিতে আইএমএফ ব্যাংক খাত সংস্কার, রাজস্ব আহরণে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিনিময় হার ব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে। আরএসএফ (Resilience and Sustainability Facility) হচ্ছে আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, এবং বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে এ তহবিল থেকে ঋণ পাচ্ছে।