‘গ্রুমিং গ্যাং’ বিতর্কে নতুন মোড়: দুই কিশোরীর যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত ৭ পুরুষ

ফাইল ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
যুক্তরাজ্যের উত্তরাঞ্চলে দুই কিশোরীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে সাতজন পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করেছে স্থানীয় আদালত। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ।
গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মিনশুল স্ট্রিট ক্রাউন কোর্টে চলমান মামলার রায়ে বলা হয়, অভিযুক্তরা ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ধর্ষণ ও শিশুদের যৌন হয়রানিমূলক আচরণসহ মোট ৫০টি অপরাধ করেছে। তিন সপ্তাহ ধরে বিচারপ্রক্রিয়া শেষে জুরি বোর্ড সর্বসম্মতভাবে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে।
মামলার শুরুতে সরকারি কৌঁসুলি রোসানো স্কামারডেলা আদালতকে জানান, দুই কিশোরীকে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করা হয়, তাদের ‘ভাগাভাগি’ করে নিপীড়নের পর অবমাননা করে ফেলে রাখা হতো। তিনি আরও জানান, সামাজিক সেবা কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই এই দুই কিশোরীর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান সম্পর্কে অবগত ছিল। এমনকি জানা ছিল তারা প্রাপ্তবয়স্ক দক্ষিণ এশীয় পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িত।
তবে অভিযুক্ত সাতজনই তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। জুরি বোর্ড এই অস্বীকারের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে দোষী সাব্যস্ত করে।
এই ঘটনা যুক্তরাজ্যের বহুল আলোচিত ‘গ্রুমিং গ্যাং’ কেলেঙ্কারির ধারাবাহিকতায় ঘটে। ২০১৪ সালে প্রকাশিত একটি তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৯৯৭ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে উত্তর ইংল্যান্ডের রদারহ্যাম শহরে অন্তত ১ হাজার ৪০০ শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।
তদন্তে বলা হয়, নিপীড়নের অধিকাংশ ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পুরুষরা। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অনেক সময় জাতিগত পরিচয় ঘিরে বিতর্ক এড়াতে সচেতনভাবে বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছে, যাতে করে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ না ওঠে।
চলতি বছর এক্স (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্ক এ ইস্যুতে মুখ খুলে বিতর্ক নতুন করে উসকে দেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার যখন যুক্তরাজ্যের প্রধান প্রসিকিউটর ছিলেন, তখন তিনি ‘গ্রুমিং গ্যাং’ কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। স্টারমার অবশ্য এই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
উল্লেখযোগ্য যে, যুক্তরাজ্যের আরও কয়েকটি শহরে বর্তমানে ‘গ্রুমিং গ্যাং’ কেলেঙ্কারির অভিযোগে বিচার ও স্থানীয় তদন্ত চলমান রয়েছে।